ভিপিএন ব্যবহারের নিয়ম এবং এর সুবিধা
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে এই আর্টিকেলে আলোচনা করব ভিপিএন ব্যবহারের নিয়ম এবং এর সুবিধা নিয়ে।
সাধারনত আমরা যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে দেখি আমাদের ইন্টারনেটের স্পিড যখন কমে যায় বা যখন কোন একটি গুরুত্বপূর্ণ সাইট ভিজিট করার প্রয়োজন হয় এবং সেই সাইটটি যদি আমাদের দেশ থেকে ব্লক করা থাকে তখন সেই সাইটটিতে ঢুকতে হলে আমাদের ভিপিএন এর কথা মনে পড়ে। VPN এর পূর্ণরূপ হল Virtual Private Network.
আমাদের মধ্যে অনেকে ভিপিএন কে ফ্রী ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যম হিসেবে মনে করে থাকে। যারা সাধারণত এমনটা মনে করে থাকেন এই কথাটা কিন্তু একেবারেই সত্য নয়। যারা আসলে জানেন ভিপিএন মানে কি তারা এই ভিপিএন এর মাধ্যমে কিছু ব্লক ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারেন।
ইন্টারনেটের এমন কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে নিজস্ব ওয়েবসাইট গুলো বিভিন্ন দেশে বন্ধ রয়েছে। আর সাধারনত এই ওয়েবসাইট গুলোতে ইমার্জেন্সি মুহূর্তে প্রবেশ করার জন্যই ভিপিএন ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তাছাড়া বর্তমানে এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিক সেইভাবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানুষের পার্সোনাল ডাটা চুরি করার মতো সাংঘাতিক হ্যাকারদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে সময়ের সাথে সাথে।
আর সাধারনত এই কারণেই নিজের পার্সোনাল ডাটা সংরক্ষণ বা নিরাপদে রাখার জন্য ভিপিএন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আপনি যদি ভিপিএন ব্যবহার করেন তাহলে আপনার স্থান সম্পর্কে হ্যাকাররা কোনভাবেই জানতে পারবে না। আর সাধারনত তখন এর বিপরীতে ভিপিএন ব্যবহার করায় অন্য একটি জায়গা দেখানো হয়ে থাকে।
সহজ কথায় যদি বলতে হয়, আপনি যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা মনে করলে খুব সহজেই আপনার অবস্থান এর মাধ্যমে জানতে পারবে কিন্তু আপনি যদি ভিপিএন ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন তাহলে হ্যাকাররা আপনার স্থান সম্পর্কে জানতে পারবেনা। আর এর ফলে আপনার পার্সোনাল ডাটা চুরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে না তেমন একটা।
তাই বর্তমান যুগে ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নিজের তথ্য নিরাপদ রাখতে হলে ভিপিএন ব্যবহার করার গুরুত্ব কিন্তু অনেকটা। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ভিপিএন ব্যবহারের কয়েকটি নিয়মঃ-
Contents
ভিপিএন ব্যবহারের নিয়ম
ভিপিএন আপনি আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। আপনি সাধারণত মোবাইলের মাধ্যমে যেমন বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ বা গেম ইন্সটল করে থাকেন ঠিক ভিপিএন অ্যাপ্লিকেশনটি আপনাকে ওইভাবে মোবাইলে বা কম্পিউটারে ইন্সটল করতে হবে।
আপনার যখন ভিপিএন অ্যাপ বা সফটওয়্যার টি ইন্সটল করা হয়ে যাবে তখন আপনি এই অ্যাপ গুলোকে এনাবল করতে হবে।তারপর অন করার সাথে সাথে আপনার ইন্টারনেট কানেকশন ভিপিএন এর সুরক্ষিত বলয় দাঁড়া কানেক্ট হয়ে যাবে।
কয়েকটি সেরা ভিপিএন অ্যাপ মোবাইলের জন্য
ভিপিএন ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে তো আপনাদের আগেই বললাম। বর্তমান সময়ে মানুষ কম্পিউটার ব্যবহারের তুলনায় স্মার্ট ফোন বেশি ব্যবহার করে থাকে। তাই আমার মনে হয় যারা স্মার্ট ফোন ব্যাবহার করে থাকেন তাদের মোবাইলে অবশ্যই একটি ভিপিএন অ্যাপ্লিকেশন থাকা জরুরি।তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের জন্য সেরা কয়েকটি ভিপিএন অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারঃ
TurboVpn:যারা সাধারণত স্মার্টফোনের ভিপিএন ব্যবহার করতে চান তারা এই ভিপিএন অ্যাপ টি ব্যবহার করতে পারেন। এই ভিপিএন অ্যাপ টি সম্পূর্ণ ফ্রি এবং আপনি খুব সহজেই এটি প্লে-স্টোর থেকে নামিয়ে আপনার স্মার্টফোনে ব্যবহার করতে পারবেন।
TunnelBear:মোবাইলে ভিপিএন ব্যবহারের জন্য এটি একটি দারুন অ্যাপ্লিকেশন। এই অ্যাপ্লিকেশনটি প্রতিমাসে ৫০০ এমবি করে ডাটা ফ্রিতে দিয়ে থাকে। আপনারা এই অ্যাপ্লিকেশনটি মোবাইলে এবং কম্পিউটারে দুই জায়গাতেই ব্যবহার করতে পারবেন।
Free vpn monster–এই ভিপিএন অ্যাপ টি অনেক দ্রুত এবং ফাস্ট প্রকৃতির। তাছাড়া এই ভিপিএন অ্যাপ্লিকেশনটি একদম ফ্রি এবং আপনি যে কোন ডিভাইসে এটি খুব সহজেই প্লে স্টোর থেকে ইন্সটল করে ব্যবহার করতে পারবেন। এই অ্যাপটি এতটাই জনপ্রিয় যা গুগল প্লে স্টোর থেকে একটি তিন লক্ষ প্লাস মানুষ ডাউনলোড করে এখনো ব্যবহার করে চলেছে।
ভিপিএন ব্যবহার এর কয়েকটি সুবিধা
আপনি যদি পেইজবুক প্রিমিয়াম ভার্শন ভিপিএন গুলো ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এই ক্ষেত্রে আপনি খুবই লাভবান হবেন। আর সাধারনত ভিপিএন ব্যবহারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা আমি নিচে আলোচনা করলামঃ-
★আপনি যখন আপনার ডিভাইস ভিপিএন কানেক্ট করে ইন্টারনেট কানেকশন অন করবেন তখন আপনার তথ্যগুলি সব নিরাপদে থাকবে।যার ফলে অনলাইনে যেসব হ্যাকার রয়েছে তাদের নজর থেকে আপনার তথ্যগুলো নিরাপদে থাকবে।
★ভিপিএন ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনাদের পরিচয় আপনারা গোপন রাখতে পারবেন। সহজ কথায় বলতে গেলে, আপনি কোন দেশ থেকে কোন স্থান থেকে ভিপিএন ব্যবহার করছেন এসব তথ্য কেউ জানতে পারবে না।
★আমাদের দেশে যদি কোন ওয়েবসাইট ব্লক করা থাকে তাহলে আপনি ভিপিএন ব্যবহার করে সেই ওয়েবসাইট গুলো খুব সহজেই ভিজিট করতে পারবেন।
★আপনি এই ক্ষেত্রে নিজের আইপি অ্যাড্রেস পরিবর্তন করে অন্য দেশের একটি আইপি অ্যাড্রেস এর মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারবেন।
★ভিপিএন ব্যবহারের সবচেয়ে বড় যে সুবিধাটি সেটি হল আপনি যদি প্রিমিয়াম ভার্সন ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার ইন্টারনেট স্পিড অনেক বেড়ে যাবে কিন্তু আপনি যদি ফ্রি ভার্সন ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ইন্টারনেট স্পিড কমে যেতে পারে।
আপনাদের হয়তো তাহলে আর বুঝতে বাকি নেই যে ভিপিএন এর ব্যবহারের ফলে আমাদের কি কি সুবিধা হবে। কিন্তু আপনি যদি ভিপিএন ব্যবহার করার মাধ্যমে খারাপ কোনো কাজ বা খারাপ কোন উদ্দেশ্য ভিপিএন ব্যবহার করে থাকেন তাহলে ভিপিএন কোম্পানি খুব সহজেই আপনার আইপি এড্রেস বের করে ফেলতে পারবে। তাই আমার পরামর্শ হবে এইটাই যে আপনি কখনো খারাপ কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে ভিপিএন ব্যবহার করবেন না।
Conclusion
তাহলে আপনারা যারা আমাদের আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তারা অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন ভিপিএন ব্যবহারের নিয়ম এবং এর সুবিধাগুলো সম্পর্কে। আর এরপরেও যদি আপনাদের ভিপিএন নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকে বা কোন কিছু বুঝতে যদি আপনাদের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
আর পোস্ট টি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি করে শেয়ার করে মানুষকে জানার ব্যবস্থা করে দেবেন। ধন্যবাদ।