বিজ্ঞান
বায়োগ্যাস প্ল্যান্টঃ কাঁচামাল, প্রভাবক, সুবিধা ও অসুবিধা!
পচনশীল বিভিন্ন জৈববস্তুকে অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে বিশেষ প্রক্রিয়ায় পচিয়ে যে দাহ্য গ্যাস তৈরি করা হয় তাকে বায়োগ্যাস বলে। এনারবিক ডাইজেশন প্রক্রিয়ায় এ গ্যাস তৈরি করা হয়। এ পদ্ধতিতে কিছু অনুজীব পচনশীল জৈব পদার্থকে ভেঙ্গে মূলত মিথেন গ্যাস, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং পানি উৎপন্ন করে। এনারবিক ডাইজেশন প্রক্রিয়া মুলত তিনটি ধাপে কাজ করে।
- বায়োমাসের বিভিন্ন উপাদান যেমন : প্রোটিন, চর্বি, শর্করা ইত্যাদি ভেঙ্গে সরল উপাদান তৈরি হয়।
- ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে সরল উপাদানগুলো বিভিন্ন জৈব এসিড তৈরি করে।
- এ ধাপে জৈব এসিড থেকে ফার্মেন্টেশন বিক্রিয়ায় মিথেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড তৈরি হয়।
বায়োগ্যাস তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামালসমুহ:
- বিভিন্ন গবাদী পশুর মলমুত্র
- মানুষের মলমুত্র
- হাস-মুরগীর বিষ্ঠা
- বাড়ির পশনশীল আবর্জনা
- পচনশীল গাছপালা
বায়োগ্যাস উৎপাদনে যে যে বিষয়গুলো প্রভাব রাখে:
- জৈববস্তু এবং পানির অনুপাত
- তাপমাত্রা
- প্লান্টের আয়তন
- পিএইচ এর মান
- কার্বন এবং নাইট্রোজেন অনুপাত
- সময়
বায়োগ্যাস প্লান্টের প্রকারভেদ:
বিভিন্ন প্রকারের বায়োগ্যাস প্লান্ট প্রচলিত রয়েছে । এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে:
- ফ্লোটিং ড্রাম প্লান্টস (চাপ স্থির থাকে)
- ফিক্সড ডোম প্লান্টস (আয়তন স্থির থাকে)
- বেলুন প্লান্টস
বায়োগ্যাস প্লান্ট এর সুবিধাসমূহ:
- এই গ্যাস প্রধানত রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায় । ফলে জ্বালানির জন্য গাছপালার উপর চাপ কমে ।
- এই প্রযুক্তি গ্রামের পরিবেশের জন্য খুবই উপযোগী ।
- এটি স্থানীয়ভাবে খুব সহজে উৎপাদন এবং ব্যবহার করা যায় ।
- অল্প খরচে এবং অল্প জায়গায় এটি তৈরি করা যায় ।
- ময়লা আবর্জনা ব্যবহার করার ফলে বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে ।
- বায়োগ্যাসের বর্জ্য জমিতে জৈবসার হিসেবে ব্যবহার করা যায় । ফলে ফসলের উৎপাদন বাড়ে এবং উৎপাদন খরচ কমে ।
- বায়োগ্যাসের বর্জ্য মাছের খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায় ।
- বায়োগ্যাস ব্যবহার পরিবেশ বান্ধব ।
- এই গ্যাস দিয়ে আমাদের অতি প্রয়োজনীয় বিদ্যুত উৎপন্ন করা যায় ।
বায়োগ্যাস প্লান্ট এর অসুবিধাসমূহ:
- এই প্লান্ট চালাতে হলে বাড়িতে গবাদীপশু অথবা পর্যাপ্ত পরিমানে কাচামালের ব্যবস্থা থাকতে হয় ।
- এই প্লান্ট স্থাপনের শুরুতে এককালীন প্রায় অনেক টাকা খরচ করতে হয় ।
- এটি নিজে নিজে বাড়িতে তৈরি করা যায়না ।
- শীতকালে তাপমাত্রার প্রভাবে কিছুটা উৎপাদন কমে যেতে পারে ।
ধন্যবাদ স্যার, খুব গুরুত্বপূর্ণ আর উপকারী টপিক….
Lovely