বিয়ে নিয় ভয়, আর নয়, আর নয়!
বিয়ে করতে ভয় পাওয়া একটি মানসিক সমস্যা। বিয়ে নামক শব্দটার সঙ্গে ছোট থেকেই আমাদের পরিচিতি রয়েছে বেশ। ছোট থেকে বড় হতে হতে আমরা পরিবারের বন্ধন দেখতে পাই বিয়ের মাধ্যমেই। কিন্তু বড় হতে হতে অনেকেরই পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে বিয়ে নামক বস্তুটায় আপত্তি চলে আসে। বিয়ে একটি সামাজিক চুক্তি, যার দ্বারা একটি পরিবারের সৃষ্টি হয়। আর সেখানে তৈরি হয় প্রেম, ভালবাসা, মায়া-মমতা, স্নেহ। তবে একই ছাদের নীচে থাকতে গেলে একটু তো মন কষাকষি হবেই। আর সেখান থেকেই চলে আসে ঝগড়া-বিবাদ। আর এসব থেকেই অনেকেরই বিয়ের প্রতি অনীহা চলে আসে।
আমাদের সমাজের এরকম অনেক মানুষ আছে যাদের বিয়ের নামেই অ্যালার্জি রয়েছে। তারা মনে করেন বিয়ে মানেই একটি সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে যাওয়া, আর সেখান থেকে বের না হতে পারার একটি ভয়ও কাজ করে। তবে এই বিয়ে ভীতি বা অনীহা এক ধরনের মানসিক রোগ- যাকে আমরা গ্যামোফোবিয়া নামে চিনে থাকি।
গ্যামোফোবিয়া হলো, বিয়ে কিংবা কোনও ধরনের স্থায়ী সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার ভয়। যারা মানসিকভাবে এই ফোবিয়ায় আক্রান্ত তারা আসলে নতুন সম্পর্ক নিয়ে আতঙ্কে থাকেন, বিবাহিত জীবন নিয়ে একটা ভয় কাজ করে, নিজের ব্যক্তি স্বাধীনতার জায়গাটুকু খর্ব হতে পারে কিংবা মানিয়ে চলা যাবে কি না এধরনের একটা চিন্তায় থাকেন এই ফোবিয়ায় আক্রান্ত মানুষরা। অনেকেই সম্পর্ক জড়ান ঠিকই তবে বিয়ের বিষয় আসলেই তারা ভড়কে যান। তাদের এরকম ফোবিয়া থাকলে বুঝতে হবে তিনি গ্যামোফোবিয়ায় ভুগছেন।
গ্যামোফোবিয়া বিভিন্ন কারণে হতে পারে। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ, পরিবারের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ বা সত্যিকারের প্রেম ভেঙ্গে যাওয়ার পর অনেকেই মানসিকভাবে এতোটাই ভেঙ্গে পড়েন যে, কাউকে আর তার আপন মনে হয় না। এরকম যাদের পরিবারে রয়েছে তারাই বেশিরভাগ এই রোগে ভোগেন। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য অবশ্যই সাইকোলজিস্টদের কাউন্সেলিং এর প্রয়োজন। এরকম লক্ষণ যাদের মাঝে থাকবে তাদের সঙ্গে অবশ্যই ধীরস্থিরভাবে চলতে হবে। কোন কিছু নিয়ে চাপ না দিয়ে সম্পর্কের মহত্ব ও গভীরতাকে সামনে নিয়ে আসতে হবে।
লিখেছেন
নাজমুল হক
শিক্ষানবিশ মনোবিদ