ব্লগ কন্টেন্ট আইডিয়া কিভাবে জেনারেট করবেন?
ব্লগ কন্টেন্ট আইডিয়া বের করার জন্য আপনাকে প্রথমে ব্রেইনস্ট্ররমিং চালাতে হবে। কিভাবে অসংখ্য ব্লগ কন্টেন্ট আইডিয়া বের করতে পারবেন তা নিয়ে আমি বিস্তারিত আলোচনা করব। আমি আপনাকে যেসব উপায় সম্পর্কে ধারণা দিব আপনি যদি এগুলো কাজে লাগাতে পারেন আপনার মাথায় অসংখ্য ব্লগ কন্টেন্ট আইডিয়া চলে আসবে। ব্লগিং করে সফল হওয়ার জন্য কন্টেন্ট আইডিয়া বের করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন কাজ।
আমি ধরে নিচ্ছি আপনি ব্লগিং এ সম্পূর্ন নতুন। আপনি কিভাবে আপনার ব্লগের জন্য অসংখ্য কন্টেন্ট আইডিয়া বের করতে পারেন আমি তা ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করব যাতে আপনার বুঝতে সুবিধা হয়। আর যারা ব্লগ লিখতে লিখতে সব লেখা শেষ করে ফেলেছেন, নতুন করে আর কি লিখবেন খুঁজে পাচ্ছেন না তারা কিভাবে কন্টেন্ট আইডিয়া বের করতে পারেন তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করব।
কিভাবে ব্লগ কন্টেন্ট আইডিয়া বের করব
ব্লগ কন্টন্টে আইডিয়া বের করার জন্য প্রথমে একটা নির্দিষ্ট বিষয় ঠিক করুন। যে বিষয়ের প্রতি অনেক মানুষের আগ্রহ থাকবে এবং আপনার লিখতে ভাল লাগবে। তারপর এই স্টেপগুলো ফলো করুন।
১। ভিজিটরঃ আপনার ব্লগ সাইটে কাদের জন্য কন্টেন্ট লিখবেন প্রথমেই তা ঠিক করে ফেলুন।
২। প্রবলেমঃ আপনার ভিজিটররা কি কি সম্যায় ভোগে তা খুঁজে বের করুন।
৩। সলুশনঃ প্রত্যেকটি প্রবলেমের সলুশন খুঁজে বের করুন।
এবার আপনি একটি পরিপূর্ন প্ল্যান তৈরি করুন। ব্লগিং করে সফল হতে হলে অবশ্যই আপনার ব্লগ সাইটটি ভিজিটরদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। ভিজিটররা যেন আপনার ব্লগ নিয়মিত পড়তে আগ্রহী হয়, সেইভাবেই আপনার সাইটে কন্টেন্ট দিতে হবে। ধরুন আপনি শুধু বিভিন্ন প্রবলেম নিয়ে আপনার সাইটে আলোচনা করবেন কোন সমাধান দিতে পারবেন না। তাহলে আপনার ভিজিটররা ব্লগ পড়ে হতাশ হবে। আর পড়তে চাইবে না।
ভিজিটরদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠার সবচেয়ে ভাল উপায় হল তাদের বিভিন্ন সমস্যার সুন্দর এবং সহজ সমাধান দেয়া। আমি উদাহরন হিসেবে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে কিভাবে অসংখ্য কন্টেন্ট আইডিয়া বের করবেন তা আলোচনা করছি। একইভাবে আপনি আপনার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবেন। দেখবেন আপনার মাথায় অসংখ্য আইডিয়া চলে আসবে।
বিষয়ঃ হেলথ & ফিটনেস
১। ভিজিটরঃ যাদের বয়স ১৮-৪০
২। প্রবলেমঃ স্বাস্থ্য নিয়ে মানুষের প্রবলেমের কোন শেষ খুঁজে পাবেন না। একটার পর একটা প্রবলেম আসতেই থাকবে।
৩। সলুশনঃ ১টা করে প্রবলেম বের করবেন আর এর সমাধান নিয়ে কন্টেন্ট লিখবেন।
এবার দেখুন আপনার মাথায় অসংখ্য কন্টেন্ট আইডিইয়া কিভাবে চলে আসে। খাবার, ব্যায়াম, বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক চিকিতসা, স্বাথ্য সচেতনতা ইত্যাদি যা কিছু আছে সবগুলোর আলাদা আলাদা ক্যাটাগরি তৈরি করে ফেলুন। মহিলা, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ এদের জন্যও ক্যাটাগরি তৈরি করুন। কারন প্রতিটি প্রবলেমের সাথে আরো অনেক প্রবলেম জড়িত থাকে। আপনি সবগুলো ক্যাটাগরিতে লিখুন।
আমি একটি ক্যাটাগরি নিয়ে আলোচনা করছিঃ খাবার
১টি করে খাবারের ভাল খারাপ দিক নিয়ে ১টা করে যদি কন্টেন্ট লিখতে থাকেন। তাহলে এই এক ক্যাটাগরিতেই কয়েকশ পোস্ট লিখতে পারবেন|
প্রথমে আপনি প্রাকৃতিক এবং সহজলভ্য ফলমূল নিয়ে লিখতে শুরু করুন। তারপর কাচা সবজ্বি, অন্যান্য় ফলমূল এবং যেসব খাবারের গুনাগুণ, উপকারিতা, আপকারিতা খাওয়ার নিয়ম যেসব জানার জন্য মানুষ গুগলে সার্চ করে।
কিওয়ার্ড রিসার্স
কন্টেন্ট লিখার আগে এটি আপনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কিওয়ার্ড বলতে এক কথায়, মানুষ যেসব শব্দ বা শব্দগুচ্ছ লিখে গুগলে সার্চ করে তাদেরকেই কিওয়ার্ড বলা। এখন আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে মানুষ কোন একটা ফল বা সবজি সম্পর্কে জানার জন্য কি কি লিখে গুগলে সার্চ করে। এখান থেকেও আপনি বেশ কিছু কন্টেন্ট আইডিয়া পেয়ে যাবেন।
সব রকমের কিওয়ার্ড আপনি গুগল থেকেই পেয়ে যাবেন। এজন্য আপনাকে গুগল কিওয়ার্ড প্ল্যানার ব্যবহার করতে হবে। এখনই আপনি আমার আগের লেখা ব্লগে পোস্ট করার নিয়ম এবং আর্টিকেল লেখার নিয়ম পোস্ট দুটি পড়ে আসুন।
এটা হলো কিওয়ার্ডের আইডিয়া জেনারেট করা। তাহলে কিওয়ার্ড রিসার্চ কি? আপনি যেসব কিওয়ার্ডের আইডিয়া পাইলেন সব কিওয়ার্ড নিয়ে কিন্তু কাজ করতে পারবেন না। কারণ কিওয়ার্ড রিসার্চের মূল উদ্দেশ্য হলো, আপনি যে কিওয়ার্ড টার্গেট করে কন্টেন্ট লিখছেন, সে কিওয়ার্ডের জন্য আপনার কন্টেন্ট গুগল সার্চ রেজাল্টের প্রথম পজিশনে নিয়ে আসতে পারবেন কি না তা রিসার্চ করে বের করা।
ব্লগিং এর জন্য বাংলা কিওয়ার্ড রিসার্চের গাইডলাইন সম্পর্কে আমার একটি পোস্ট আছে। এটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন আপনার কোন কিওয়ার্ড টি নিয়ে কাজ করা উচিত আর কোনটি নিয়ে কাজ করা উচিত না। কিওয়ার্ড রিসার্চের জন্য সব সময় মাথায় রাখবেন যে, লং টেইল কিওয়ার্ড দিয়ে র্যাংকে আসা সহজ এবং অনেক বেশি টার্গেট অডিয়েন্স পাওয়া সম্ভব।
ব্লগিং করে আয় করতে হলে যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, কিওয়ার্ডের সিপিসি ভ্যালু। আপনি যদি এমন সব কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করেন যেগুলোর কোন সিপিসি নাই, তাহলে আপনার ইনকাম খুব কম হবে। কেননা আপনি আপনার ব্লগের ইনকাম জেনারেট করবেন গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে। যদি আপনি বিজনেস করেন, এডসেন্স ব্যবহার না করেন, তাহলে সিপিসি দেখার কোন প্রয়োজন নেই। বেশিরভাগ ব্লগাররা শুধুমাত্র এডসেন্সের মাধ্যমে ইনকাম করে থাকেন। তাই, ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় পোস্ট টি একবার দেখে আসুন।
আপনি যদি ঠিকমত ব্রেইনস্টর্মিং চালাতে পারেন, তাহলে আশা করছি এতক্ষণে একশ এর কাছাকাছি কন্টেন্ট আইডিয়া পেয়ে গেছেন। এখন আপনি কন্টেন্ট লিখা শুরু করতে পারেন। কন্টেন্ট লেখার ঠিক পরের কাজটি হলো আপনার কন্টেন্ট নির্দিষ্ট কিওয়ার্ডের জন্য গুগল সার্চ রেজাল্টের প্রথম পজিশনে নিয়ে আসা। এজন্য আপনাকে এসইও জানতে হবে। নিচের পোস্ট পড়ে আসুন
- এসইও কি এবং কিভাবে শিখবেন
আরো কন্টেন্ট আইডিয়া জেনারেট করার জন্য আপনি রূপচর্চা ক্যাটাগরিতে যান। তার সাথে আছে বিভিন্ন রোগবালাই এবং চিকিৎসা। এগুলো খাবারের সাথে খুব ঘনিষ্ট ভাবে সম্পর্কযুক্ত। আপনি হয়তো জানেন না, মানুষ গুগলে এটা খেলে কি হয়, ওটা খেলে কি হয়, রূপচর্চায় এর ব্যবহার এগুলোও জানতে চায়।
Conclusion
বাংলা ব্লগ কন্টেন্ট আইডিয়া জেনারেট করার জন্য আমার পুরো লেখাটি আপনাকে অনেক বেশি হেল্প করবে। পোস্ট টি পরবর্তিতে পড়ার জন্য সেইভ করে রাখুন অথবা ফেসবুকে শেয়ার করে রাখুন। আপনার যেকোন বিষয় বুঝতে সমস্যা হলে অথবা আরো কিছু জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করুন।
আমার একটি ব্লগ আছে সেখানে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই পোষ্ট পাবলিশ করি, এতে করে কি আমার এডসেন্স পেতে কোনো সমস্যা হবে??
প্লিজ জানাবেন।
না, কপি না হলে কোন সমস্যা নাই।