ব্লগিং

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এই প্রশ্নের উত্তর এক কথায় বলতে হলে প্রতিমাসে ১০০ থেকে এক হাজার ডলার বা আরো বেশি টাকা আয় করা যায়। আজকের পোস্টে আপনারা এই বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন। আমার কাছে এই প্রশ্নটি অনেকেই করেছেন, সবাইকে আমি এক কথায় উত্তর দেবার চেষ্টা করেছি। বিস্তারিত বলার সময় এবং সুযোগ না হওয়ায় আমি আপনাদের অনেক কিছু বলতে পারি নাই। আমি জানি আপনারা চান ব্লগিং করে বেশ হ্যান্ডসাম এমাউন্ট আর্ন করতে। জ্বি এটা সম্ভব।

ব্লগিং সম্পর্কিত বিভিন্ন পোস্টে আমি আপনাদের যেসব গাইডলাইন দিয়েছি এগুলো যদি ফলো করতে পারেন তাহলে আপনিও একসময় প্রতিমাসে অন্তত ৫০০-৭০০ডলার ইনকাম করতে পারবেন। আমি নিজে ব্লগিং করে কত টাকা আয় করছি, কিভাবে করছি, কতদিন সময় দিয়েছি, দিনে কত সময় ধরে কাজ করেছি এই সব বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করব। এবার চলুন একটু বিস্তারিত জেনে নিইঃ

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়

আমি আপনাদের সাথে বাংলায় ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এই বিষয়ে সবকিছু বলব। তবে জেনে রাখুন, বাংলায় ব্লগিং করে আপনি যে পরিমাণ আয় করতে পারবেন, ইংরেজিতে করলে তার থেকে কমপক্ষে ১০গুণ বেশি আয় করতে পারবেন। এরকম কেন হয় সে বিষয়েও আমি আপনাদের বলব।

বাংলায় ব্লগিং করে প্রতিমাসে এক হাজার ডলারের বেশি আয় করে এমন তিন জন ব্লগারের সাথে আমি নিজে কাজ করেছি। আরো বেশ কয়েকজন ব্লগারের সাথে আমার পরিচয় আছে যারা প্রতিমাসে ২০০-৫০০ডলার আয় করে। এভারেজ হিসাব করলে, যারা ব্লগিং করছে ২০০ ডলারের বেশি ইনকাম সবাই ইনকাম করতে পারছে।

যদিও আমার আগের পোষ্ট অনলাইনে টাকা আয় করার সহজ উপায় এ আপনাদের গুগল এডসেন্সের একটা ক্যালকুলেটর দেখিয়েছিলাম, যেখানে আপনারা দেখেছিলেন আপনার ব্লগে যদি প্রতিমাসে ৫০হাজার পেজ ভিউ হয় তাহলে আপনার সম্ভাভ্য বাৎসরিক আয় ৬হাজার ডলারের কাছাকাছি হয়। আপনি যদি এর অর্ধেক ও হিসেব করেন তাহলে আপনার বছরে ৩হাজার ডলার এবং মাসিক ২৫০ডলার এর বেশি আয় হবে অনায়াসে।

আমার ব্লগিং করে আয় করার অভিজ্ঞতা

আমি একজন ডিজিটাল মার্কেটার এবং এই বিষয়ে আমার বেশ ভালো জ্ঞ্যান আছে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এই বিষয়ের উপর বাংলায় বিভিন্ন টিউটোরিয়াল তৈরি করি। কেননা বাংলায় প্রচুর মানুষ গুগলে সার্চ করে এবং এটি বাড়ছেই। আমি যেটি দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তা হলো গুগল সার্চ রেজাল্টে এসব বিষয়ে আমি তেমন ভালো কোন পোস্ট পাইনি, তখন আসলে নিজের দায়িত্ব থেকে বাংলায় ব্লগিং শুরু করি।

প্রথমে আমার পছন্দের domain টি কিনেছিলাম এবং hosting, আমার namecheap থেকে কিনে নিতে টোটাল ২৬ ডলার খরচ হয়েছিল। এর পরে আমি নিজে ওয়েবসাইট ডিজাইন করে রেগুলার পোস্ট লিখতে থাকি। এখানে আমার আর কোন ইনভেস্ট করতে হয়নি। ৩০টা পোস্ট পাবলিশ করার পরে আমি এডসেন্স এর জন্য আমি এপ্লাই করি এবং পেয়ে যাই, এখানে আমার সময় লাগে ২মাস।

এর পরে আমার আর্নিং শুরু হয়। জেনে রাখুন, আপনার ব্লগে কেউ কিছু পড়তে বা জানতে আসলে তাতে আপনার কোন প্রকার আর্নিং হবে না। কেননা বিজ্ঞাপন দেখে টাকা ইনকাম হয়না। কেউ যদি আপনার পোস্টে দেখানো কোন এড এর উপর ক্লিক করে, শুধুমাত্র তখনই আপনার আয় হবে। এভাবে আমি নিয়মিত পোস্ট লিখতে থাকি, আমার ব্লগে ট্রাফিক বাড়তে থাকে আর খুব আস্তে আস্তে আমার আর্নিং বাড়তে থাকে।

৩য় মাসে আমার ইনকাম হয় ০.৩২$ তবে আমি খুব খুশি ছিলাম। কারণ ঘরে বসে ইনকাম করার উপায় হিসেবে এটি আমার কাছে বেশ ভালো মনে হচ্ছিল। এভাবে ৪র্থ এবং ৫ম মাসে গিয়ে আমার ১৪ডালার টোটাল ইনকাম হয়। আমি খুব ধৈর্যের সাথে নিয়মিত কাজ করে গিয়েছি। আমার ১০০ ডলার আয় হতে টোটাল সময় লেগেছে ১বছর। তারপর ১৩তম মাসে গিয়ে আমার আয় হয় ২০০ ডলার।

এখন আমার ইনকাম শুধু বাড়ছেই। আমি দিনে ২-৩ঘন্টা বা সপ্তাহে ৫দিনের কম কাজ করলেও আমার ইনকাম ঠিকই আসছে। আমার কাছে ব্লগিং বেস্ট ওয়ে টু মেক মানি অনলাইন। তবে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, ব্লগিং করে টাকা আয় করবেন শুধুমাত্র এই উদ্দেশ্যে যদি এই সেক্টরে আসেন, তাহলে আপনি কখনোই সফল হতে পারবেন না। কারণ এখানে আপনার অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, থাকতে হবে ব্লগিং এর প্রতি ভালো লাগা ভালোবাসা এবং নিত্যনতুন জিনিস সম্পর্কে জানার অদম্য ইচ্ছা।

আপনার কি ব্লগিং করে টাকা আয় করা উচিৎ?

জ্বি অবশ্যই। ঘরে বসে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য ব্লগিং করার চেয়ে আর ভালো কোন উপায় পাবেন না। এবারে আপনি আমার কথা গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন, তেতো হলেও কথাগুলো মনে রাখতে হবে। এতক্ষণ আপনি যা জানলেন, নিজের ক্ষেত্রেও এতটা ধৈর্য নিয়ে আপনি কাজ করতে পারবেন কি না? বার বার নিজেকে প্রশ্ন করুন।

বাংলাদেশে প্রায় প্রতিদিন ৫টা নতুন ব্লগ সাইটের জন্ম হচ্ছে। তারা কেন এখানে টিকতে পারছে না? জ্বি হ্যাঁ, যথেষ্ট দক্ষতা থাকা সত্বেও টিকে থাকতে পারছে না। আমার পরামর্শ নিন, কমপক্ষে ৬মাস ধরে পুরো বিষয়টি ভালো করে জানুন, বুঝুন, শিখুন। তারপরে সিদ্ধান্ত নিন। যতটা সহজ ভাবে আমি আপনাকে বুঝানোর চেষ্টা করছি, বিষয়টা আসলে অতটা সহজ না। আপনি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না অথচ ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এইটা জানার জন্য অস্থির হয়ে আছেন।

কেন ভাই? টাকা আয় করার অন্য কোন রাস্তা খুঁজতে পারেন না? আপনি কি কিছুই পারেন না? নিজে যেটা পারেন, নিজের দক্ষতা কাজে লাগান। কোথায়, কিভাবে, কত সহজে শর্ট-কাট উপায়ে টাকা আয় করা যায় এসব না খুঁজে নিজের ভালো লাগা খুঁজুন। কোন কাজ টি আপনার সবসময় করতে ভালো লাগবে। দিনের পুরোটা সময় যদি ঐ কাজ করেন একটুও বিরক্ত হবেন না।

আছে না এমন কিছু বিষয়, সারাদিনে একবার হলেও আমার ওইটা লাগবে, ওইটা না হলে আমার চলেই না, আমি অস্তির হয়ে যাই, আমার নেশা আমার ভালোবাসা। ওইটা আমার লাগবেই। এটাই হচ্ছে আপনার প্যাশন। খুঁজে বের করুন এমন কোন কাজ। যদি সেটা ব্লগিং হয়, তাহলে আপনাকে স্বাগতম।

5/5 - (34 votes)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button