ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম – nid card download
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম জেনে এখনই ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করে নিন। আবেদনের পর ভোটার আইডি কার্ড হাতে পাওয়া অনেক সময়সাপেক্ষ। তাই অনেকেই জানতে চায় অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম। এই পোস্টে আমরা জানতে পারবো- ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।
ভোটার আইডি কার্ডের প্রয়োজনীয়তার কথা আমাদের সকলেরই জানা। দেশের নাগরিক সুবিধা, প্রশাসনিক কাজে, সিম কার্ড রেজিষ্ট্রেশন সহ নানা প্রয়োজনে এটি থাকা বাধ্যতামূলক। তাই ভোটার আইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন কপি ডাউনলোড করে তা সর্বত্র ব্যবহার করা যায়। ভোটার আইডি না থাকলে আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাই জেনে নিন- অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার নিয়ম।
Contents
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করলে আইডি কার্ড প্রক্রিয়াকরনে ৭-১৫ দিন সময় লাগে। কিন্তু তা হাতে পেতে কয়েকমাস দেরি হয়। তবে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই নিবন্ধিত আইডি কার্ডের অনলাইন কপি সার্ভারে পাওয়া যায়। এসময় নানা প্রয়োজনে ও আইডি কার্ডের তথ্য ঠিক আছে কিনা তা জানতে চায় অনেকেই।
এসময় বাংলাদেশ NID সার্ভার এর এই লিংকে- http://www.nidw.gov.bd/ রেজিস্টার করে আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করে তা দিয়ে সকল কার্য সম্পাদন করা যায়। নিজের হাতে থাকা স্মার্টফোনটি দিয়ে খুব সহজেই ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম অনুসারে তা ডাউনলোড করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে কি কি লাগে
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম খুবই সহজ। কিছু সাধারন তথ্য দিয়েই তা ডাউনলোড করা যায়। যেমন-
- একটি স্মার্টফোন বা পিসি।
- মোবাইলে NID Wallet এপ্স।
- NID নিবন্ধন স্লিপ নাম্বার অথবা আপনার মোবাইল নাম্বারে নির্বাচন কমিশন থেকে মেসেজে আসা নতুন NID নাম্বার।
- একটি মোবাইল ফোন নাম্বার।
- জন্মতারিখ।
- স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানার তথ্য।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
NID এর সরকারি ওয়েবসাইট থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে হলে গুগল প্লে স্টর থেকে NID Wallet এপ্স টি ডাউনলোড করে নিতে হবে। তারপর নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরন করুন-
ধাপঃ- (১) নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে প্রবেশ
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে প্রথমে গুগলে NID লিখে সার্চ করলেই প্রথম পাতায় nidw.gov.bd সাইটে প্রবেশ করতে হবে। অথবা সরাসরি এই লিঙ্কে প্রবেশ করুন- https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/।
ধাপঃ- (২) একাউন্ট রেজিস্টার
লিংকে প্রবেশ করার পর উপরের ছবির মতো ইন্টারফেস আসবে। এখান থেকে একাউন্ট খুলার জন্য রেজিস্টার করুন- এ ক্লিক করতে হবে
ধাপঃ- (৩) ফর্ম নম্বর ও জন্মতারিখ প্রদান
একাউন্ট রেজিস্টার করার জন্য প্রথমে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর অথবা ভোটার স্লিপ নম্বর টি লিখুন। তারপর ক্রমান্বয়ে জন্ম তারিখের দিন, মাস ও বছর পূরন করুন।
তথ্য প্রদানের পরে নিচের ক্যাপচায় থাকা কোডটি লিখুন এবং সাবমিট এ ক্লিক করলে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে।
ধাপঃ- (৪) বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা
এবার আপনার আইডি কার্ডের আবেদনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আপনার বিভাগ, জেলা ও উপজেলার নাম নির্বাচন করুন। তারপর একইভাবে আপনার স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করুন। সবগুলো পূরন করা হলে পরবর্তী – তে ক্লিক করুন।
ধাপঃ- (৫) মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই
বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা পূরন করার পর মোবাইল ভেরিফাই করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার ভোটার আইডি কার্ড আবেদনের সময় ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি ডিফল্ট ভাবে দেওয়া থাকবে। আপনি চাইলে এখান থেকে মোবাইল পরিবর্তনে ক্লিক করে আপনার হাতে থাকা সিম নাম্বার টি দিতে পারবেন। তারপর বার্তা পাঠানে ক্লিক করুন।
এবার আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি OTP Code আসবে। যাচাইকরন কোডের ঘরে সেই OTP Code টি লিখুন ও বহাল এ ক্লিক করুন।
ধাপঃ- (৬) ফেইস ভেরিফিকেশন
এই ধাপে ফেইস ভেরিফিকেশনের জন্য একটি QR Code দেওয়া হবে।
প্রথমে অন্য একটি মোবাইলে NID Wallet এপ্স এ প্রবেশ করুন। তারপর এই QR Code টি স্ক্যান করুন। তারপর Start Face Scan এ ক্লিক করে ফেইস ভেরিফাই শুরু করুন। আপনার ফেইস সেলফি ক্যামেরার সামনে ধরুন।
প্রথমে সামনের দিকে তাকান, তারপর হালকা ডানে ও বামে মাথা ঘুরালেই ফেইস ভেরিফাই হয়ে যাবে।
ধাপঃ- (৭) পাসওয়ার্ড সেট করুন
এ ধাপে দুইটি অপশন আসবে পাসওয়ার্ড সেট করুন এবং এড়িয়ে যান।
Add Password এ ক্লিক করে আপনি পাসওয়ার্ড সেট করে নিবেন তাহলে পরবর্তীকালে কোন ঝামেলা ছাড়াই আপনার NID একাউন্টে প্রবেশ করতে পারবেন।পাসওয়ার্ড সেট করে রাখলে পরে আর রেজিস্টার ও ফেইস ভেরিফাই করতে হয় না।
ধাপঃ- (৮) NID Card ডাউনলোড
এবার আপনাকে আপনার প্রফাইলে নিয়ে যাওয়া হবে। এখানে অনেকগুলো অপশন দেখানো হবে।
এখান থেকে ডাউনলোডে ক্লিক করলেই আপনার ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। এবং আপনার NID Card এর একটি pdf ফাইল ডাউনলোড হয়ে যাবে।
উপরোক্ত ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম এ খুব সহজেই আপনার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি পাবেন। পরে তা প্রিন্ট করে লেমিনেশন করে নিলেই যেকোন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
উপরোক্ত আলোচনায় ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম অনুযায়ী শুধু নতুন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করা যাবে। কিন্তু পুরাতন আইডি কার্ড নষ্ট হয়ে গেলে তা ডাউনলোড করার জন্য রিইস্যু করে ফি প্রদাবের পর ডাউনলোড করা যাবে।
অন্যদিকে, আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে প্রথমেই স্থানীয় থানায় জিডি করতে হবে। তারপর সেই জিডির কপি ব্যবহার করে রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন অনুমোদন দেওয়া হলে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম অনুযায়ী তা সংগ্রহ করা যাবে।
আরো দেখুনঃ ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম – অনলাইন আবেদন ২০২৩, পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম – ২০২৩, অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম ২০২৩
FAQ’s
ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি কোথায় পাওয়া যায়?
বাংলাদেশের NID Service এর www.nidw.gob.bd এই ওয়েবসাইটে ভাওটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি পাওয়া যায়।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে কত দিন সময় লাগে?
নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করার পর তা স্থানীয় নির্বাচন অফিস থেকে যাচাই-বাছাই করে প্রক্রিয়াকরনের জন্য পাঠানো হয়। এক্ষেত্রে ৭-১৫ দিনের মধ্যে আইডি কার্ডের অনলাইন কপি www.nidw.gob.bd সাইটে প্রকাশ করা হয়। সরকারি হালনাগাদে আইডি কার্ড পেতে সময় লাগলেও অনলাইন কপি ডাউনলোড করে সকল কাজ করা যায়।
হারানো আইডি কার্ড বের করার নিয়ম কি?
আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে স্থানীয় থানায় প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে জিডি করতে হবে। তারপর সেই জিডির কপি সংযুক্ত করে আইডি কার্ড রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে হবে। আপনার রিইস্যু আবেদন অনুমোদিত হলে অনলাইন থেকে আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড দেখার নিয়ম কি?
ভোটার আবেদনের স্লিপ নম্বর, জন্ম তারিখ ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে www.nidw.gob.bd সাইটে রেজিষ্ট্রেশন করে ফেইস ভেরিফাই করলে প্রোফাইল থেকে ভোটার আইডি কার্ড দেখা যায়।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম কি?
নুন্যতম ১৬ বছর বয়স হলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে বা অনলাইনে www.nidw.gob.bd সাইটে আবেদন করার মাধ্যমে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করা যায়।
শেষকথা
ভোটার আইডি কার্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বস্তু। নতুন ভোটার আইডি কার্ডের ক্ষেত্রেই সহজে অনলাইন কপি ডাউনলোড করা যায়। তবে তা হারিয়ে গেলে পোহাতে হবে অনেক ঝামেলা। তাই এর ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
আজকের আলোচনার মূল বিষয় ছিলো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম। উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন নতুন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত। পোস্টটি আপনার উপকারে আসলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভূলবেন না, ধন্যবাদ।