Uncategorized

খুশকি দূর করার উপায় প্রাকৃতিকভাবে

5/5 - (21 votes)

খুশকি দূর করার উপায় অনেক খুঁজেছেন তাই তো? নারী কিংবা পুরুষ চুলের যত্নে প্রত্যেকেই অনেক সর্তক থাকেন। এরকম অনেকেই মাথার চুলে খুশকির সমস্যায় ভুগছেন। খুশকির কারণে পড়তে হয়েছে কতই না বিব্রতিকর পরিস্থিতিতে। নষ্ট হচ্ছে আপনার চুলের সৌন্দর্য। মানুষের সামনে যেতে লজ্জা পাচ্ছেন। করেছেন অনেক শ্যম্পু ব্যবহার। খুশকি দূর করার জন্য যখন যে উপায় পেয়েছেন চোখ বুজে সেই উপায়ে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোন ফল পাননি, উল্টো ক্ষতি করেছেন নিজের চুলের।

চিন্তার কোন কারণ নেই। সঠিক উপায়ে চেষ্টা করে দেখুন। চুলের খুশকি দূর করা কোন কঠিন বিষয় না। আজকের পোস্টে চুলের খুশকি দূর করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। যদি আপনি এগুলো কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে নিশ্চিতভাবে খুশকি মুক্ত সুন্দর ঝলমলে চুল পাবেন।

খুশকি (বৈজ্ঞানিক নাম Seborrheic Dermatitis) চুলের গোঁড়ায় ত্বকের একটা সমস্যা। সব বয়সের মানুষের খুশকি হতে পারে। মাঝে মাঝে এটা খুব বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়ায়। তবে ঘরে বসে খুশকি দূর করার উপায় আছে। নিয়মিত চুল না আঁচড়ালে, শ্যম্পু না করলে, মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক বেড়ে গেলে, ইত্যাদি কারণে চুলে খুশকি হয়। এর কারণে চুলের গোঁড়ায় চুলকায়, ফলে চামড়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হয়ে উঠে আসে।

খুশকি দূর করার উপায় সমূহ

প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি খুশকি দূর করার শ্যাম্পু এবং ঔষধ দিয়ে এই রোগ ভাল করা যায়। এগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক তাই এর কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই।

নিমপাতা

নিমপাতা (Lilac Leef) এ আছে এন্টিফাংগাল ও এন্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান যা, চুলের গোঁড়ায় কোন প্রকার ঘা-পচড়া এবং চুল পড়া দূর করতে খুব কার্যকর। চুলের যত্নে এটা প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ৪-৫ কাপ পানির সাথে কিছু নিম পাতা সিদ্ধ করে নিন। এরপর ঠন্ডা হলে এটা মাথা ধুয়ে ফেলুন। অথবা নিম পাতা বেঁটে মাথায় লাগিয়ে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এর পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

প্রাকৃতিকভাবে খুশকি দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে ভাল উপায়। চেষ্টা করে দেখুন, নিশ্চিতভাবে আপনার চুল খুশকি মুক্ত হবে।

নারিকেল তেল

যুগ যুগ ধরেই চুলের যত্নে প্রসিদ্ধ নারিকেল তেল। নারকেল তেল খুশকি দূর করতে খুব কার্যকরী। এটা চুলের গোঁড়ার শুষ্ক ভাব দূর করে এবং চুলকানি থেকে মুক্তি দেয়। পরিমাণ মত নারিকেল তেল এবং সাথে অর্ধেক অংশ লেবুর রস নিন। চুলের গোঁড়ায় ভাল করে মালিশ করুন। ২০ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন। এটা সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার করুন। এমনকি আপনি শুধু নারিকেল তেল ব্যবহার করেও উপকার পেতে পারেন।

আপেল সিডার ভিনেগার

চুলের গোঁড়ার চিকিৎসায় বিশেষকরে খুশকি দূর করতে আপেল সিডার ভিনেগার বা সিরকা অনেক প্রসিদ্ধ। এটা চুলের গোঁড়ার pH এর পরিমাণ ফিরিয়ে আনে ফলে এর স্বাস্থ্য বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও এটা চুলের গোঁড়ার জীবাণু ধ্বংস করে একে শক্তিশালী করে। ২ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ১৫-২০ ফোঁটা ট্রি টি অয়েল মিশিয়ে মাথায় ভাল করে মালিশ করুন। কিছুক্ষণ পর আলতোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।

অলিভ ওয়েল

মাথার ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে অলিভ অয়েল অনেক ফলপ্রসূ। এতে আছে এক্সট্রা-ভার্জিন তেল যা ত্বকের যত্নে যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পরিমাণ মত অলিভ অয়েল হালকা গরম করে নিন। এরপর চুলের গোঁড়ায় ভালভাবে মালিস করতে থাকুন। পরিষ্কার ও উষ্ণ তোয়ালে মাথায় পেচিয়ে রাখুন। এভাবে ৪৫ মিনিট অথবা সারারাত থাকুন। এরপর শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে কয়েকবার করে এটি ব্যবহার করুন।এই তেল অন্যান্য অনেক তেলের সাথেও মিশিয়েও ব্যবহার করা যায়।

লেবুর রস

লেবুর রসে ফাঙ্গাস দূর করার এসিড আছে। এটা খুশকির কারণে হওয়া চুলকানিও দূর করতে সক্ষম। অর্ধেক লেবুর রস ৩ টেবিল চামচ দইয়ের সাথে মিশিয়ে মাথার ত্বকে ভাল করে মালিশ করুন। ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে মাথা ধুয়ে ফেলুন। অথবা একটা লেবুর রস পানির সাথে মিশিয়ে ৫ মিনিট রাখুন। এরপর শ্যাম্পু সহকারে সেটা দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন।

যাদের মাথার ত্বক শুষ্ক তারা এই প্রক্রিয়াটা গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে পারেন।কারন লেবু ব্যবহার এ মাথার ত্বক এর অতিরিক্ত তেল দূর হয়।আপনার মাথার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে লেবুর রস অনেক ভালো কাজ করবে।কিন্তু এর অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে অবশ্যই দূরে থাকবেন।

মেথির প্যাক

খুশকি দূর করতে মেথি অনেক জনপ্রিয় এবং প্রসিদ্ধ। এতে আছে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন ও এমিনো এসিড যা চুলের যত্নে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এতে আছে এন্টিফাংগাল যা খুশকি তাড়াতে খুবই কার্যকরী। ৩ টেবিল চামচ মেথি রাতভর পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে এটা বেঁটে মাথায় লাগান। দ্রুত ফলাফলের জন্য চাইলে এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। মেথি বাঁটা কয়েক ঘণ্টা মাথায় রেখে তারপর শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এটা দুইবার ব্যবহার করুন।

বেকিং সোডা

রান্না করতে ব্রেকিং সোডা কমবেশি আমরা সবাই ব্যবহার করে থাকি।খুশকি দূর করতে রান্না করার এই সোডা অনেক উপকারি  ভূমিকা পালন করে। এটা মাথার ত্বকের মৃত কোষগুলোকে দূর করে এবং চুলের গোড়ার অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। এটা ছত্রাক দূর করে চুলকে ঝলমলে ও মোটাতাজা করতে সাহায্য করে। আগে চুল ভিজিয়ে নিন, এরপর বেকিং সোডা নিয়ে মাথায় ও চুলে ভালভাবে ঘষতে থাকুন। কয়েক মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই বার এটা ব্যবহার করুন।

সতর্কতাঃ এই চিকিৎসা নেয়ার সময় চুলে শ্যাম্পু করবেন না।

মুলতানি মাটি

ত্বক ও চুলের যত্নে মুলতানি মাটি অনেক প্রসিদ্ধ যুগ যুগ ধরেই। প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর তালিকায় মুলতানি মাটি অনেকটা শীর্ষেই অবস্থান করে। আর খুশকি দূর করতেও এর কার্যকারিতা ব্যাপক। এটা নিয়মিত ব্যবহারের ফলে চুল নরম, ঝলমলে এবং খুশকি হীন থাকে। পারিমান মত মুলতানি মাটি, পানি ও লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর এটা মাথার ত্বকে মাখিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। সবশেষে মাথা ধুয়ে ফেলুন।

অ্যাসপ্রিন ও শ্যাম্পু দিয়ে প্যাক

জ্বরের ঔষধ হিসেবে অ্যাসপ্রিন (Aspirin) অনেক পরিচিত হলেও খুশকি দূর করতে এটা অনেক কার্যকরী। এতে প্রচুর পরিমাণে সালিসাইলিক এসিড আছে যা, বাজারে পাওয়া খুশকি দূর করার শ্যাম্পু (Anti-dandruff Shampoo) তৈরির প্রাধান উপাদান। এটা খুশকি দূর করে চুলকে আরো সতেজ করতে পারে। ২টি অ্যাসপ্রিন ট্যাবলেট গুড়ো করে শ্যাম্পুর সাথে মিশিয়ে ভাল করে মাথায় মাখিয়ে কেয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ভাল করে মাথা ধুয়ে নিন। অথবা ২টি ট্যাবলেটের গুড়োর সাথে ১ টেবিল চামচ ভিনেগার মিশিয়ে মাথায় ভাল করে মালিশ করুন। ৩০ মিনিট পর মাথা ধুয়ে ফেলুন।

মেহেদী পাতা ও লেবুর শ্যাম্পু

খুশকি দূর করতে মেহেদির গুনাগুণ অনেক জনপ্রিয়। এটা চুলকে নরম ও উজ্জ্বল করে। কিছু মেহেদী পাতা বেঁটে চা পাতা ও দইয়ের সাথে মিশিয়ে নিন। এরপর পরিমাণ মত লেবুর রস মিশিয়ে ৮ ঘণ্টা ঠান্ডা স্থানে রেখে দিন। মাথায় ভালভাবে লাগিয়ে ২ ঘণ্টা রেখে মাথা ধুয়ে ফেলুন।

আমার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট চুল পড়া বন্ধ করার উপায় দেখে নিন।

Conclusion

খুশকি দূর করার উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানলেন। যদি আপনার মনে আরো কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন, আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিব। মনেরাখবেন, খুশকি দূর করার প্রাকৃতিক ঔষধগুলো ভাল ফলাফলের জন্য সপ্তাহে ৩ বার করে ব্যবহার করবেন যতদিন পর্যন্ত খুশকি দূর না হয়।

ঘরের কোণে বা বারান্দায় আমরা অনেকই শখের বসে বিভিন্ন রকম পাতাবাহার গাছ লাগিয়ে থাকি। কিন্তু আপনি কি জানেন? এগুলো বিষাক্ত? কিভাবে আপনার ক্ষতি করছে? আমাদের ওয়েবসাইট থেকে এটি জেনে নিন।

zahid

A professional SEO Expert & Digital Marketing Consultant. Enhancing online visibility of business is my job. Keeping update myself with new search algorithm update and stay top on search results is my passion.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button