ওয়ার্ডপ্রেস কিভাবে শিখব কমপ্লিট গাইডলাইন
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হল ওয়ার্ডপ্রেস। অনলাইনে ইনকাম করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আসতে হবে। আজকের এই পোস্টে থাকবে ওয়ার্ডপ্রেস কি, ওয়ার্ডপ্রেস কিভাবে শিখব, কেন শিখব এবং ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আয় করবেন কিভাবে তার কমপ্লিট গাইডলাইন।
Contents
ওয়ার্ডপ্রেস কি?
এক কথায় ওয়ার্ডপ্রেস হল একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করতে সবচেয়ে সহজ এবং জনপ্রিয় মাধ্যম। পুরো ইন্টারনেটের প্রায় 60% এর বেশি ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা। টেকনিক্যালি বলতে গেলে ওয়ার্ডপ্রেস হলো একটি ওপেনসোর্স কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম যা GPLv2 লাইসেন্সের অধিভুক্ত। যার অর্থ যে কেউ সম্পূর্ণ ফ্রিতে ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যার টি মডিফাই করতে পারবে। কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হল এমন একটি টুল যা দ্বারা খুব সহজে একটি ওয়েবসাইটের গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যেমন-কনটেন্ট, কোনরকম কোডিং নলেজ ছাড়া খুব সহজে ম্যানেজ করতে পারবে।
ওয়ার্ডপ্রেস একদম সাধারন মানুষের জন্য যারা ডেভলপার নয় তাদের কাছেও ওয়েবসাইট তৈরি করা একদম সহজ করে দিয়েছে।
ওয়ার্ডপ্রেস কেন শিখব?
আপনি ইতিমধ্যে জেনে গেছেন যে পৃথিবীর ৬০% এর বেশি ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা এবং এটাও জেনেছেন যে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে খুব সহজে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। তাছাড়া আপনি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে খুব সহজে আপনার ওয়েবসাইট ম্যানেজ করতে পারবেন। আপনি ফ্রিল্যান্সিং করেন অথবা অনলাইনে যে কোন বিজনেস করেন তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিসটি প্রয়োজন তা হলো একটি ওয়েবসাইট। যেহেতু ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে খুব সহজেই ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় এবং এটি আপনি খুব অল্প সময়ে শিখে ফেলতে পারবেন আর এটি শিখতে কোনরকম কোডিং নলেজ এর প্রয়োজন নেই, তাই ওয়েবসাইট তৈরি করতে ওয়ার্ডপ্রেস শিখে ফেলা আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।
ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনার একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট এর প্রয়োজন। আর এই পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে খুব সহজে তৈরি করে ফেলতে পারবেন। মার্কেটপ্লেসে গেলে দেখতে পাবেন ওয়ার্ডপ্রেসের প্রচুর কাজ রয়েছে। শুধুমাত্র ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করে আপনি প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস কিভাবে শিখব?
মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে আপনি খুব সহজে ওয়ার্ডপ্রেস শিখে ফেলতে পারবেন। প্রতিদিন মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় দিলেই চলবে। ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে আপনার প্রচুর সময় কিংবা টাকার প্রয়োজন নেই।
প্রথমে আপনি xampp সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করুন এবং ইনস্টল করুন। তারপর wordpress ডাউনলোড করুন। xampp সফটওয়্যার দিয়ে আপনার পিসিতে লোকাল সার্ভার তৈরি করতে হবে। আপনার পিসিতে পুরো একটি ওয়েবসাইট তৈরি এবং ডিজাইন করতে পারবেন। ওয়ার্ডপ্রস ইনস্টল করে আপনি কাজ শিখা শুরু করবেন।
ওয়ার্ডপ্রেসের অসংখ্য থিম এবং প্লাগিন আছে যেগুলো ব্যবহার করে খুব সহজে ওয়েবসাইট তৈরি এবং যেকোন কিছু মডিফাই করতে পারবেন খুব সহজে। থিম হলো আপনার ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে তা। আর প্লাগিন হল বিভিন্ন ফাংশন দ্বারা তৈরি যা দিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে যেকোন ফিচার এড করতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেসের ইন্টারফেইস খুবই সহজ। দুই একদিনের মধ্যেই এটি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা শিখে ফেলবেন। তারপর আপনার কাজ হল থিম কাস্টমাইজ কিভাবে করতে হয় তা শিখা। ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করে খুব সহজেই নিজের পছন্দমত ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন। তার পর আপনার কাজ হল প্লাগিন ব্যবহার শিখা। যেমন বিভিন্ন উইজেড, কন্টাক্ট ফর্ম, সাইট্ম্যাপ, অন পেইজ এসইও, ওয়েবসাইটের স্পিড বাড়ানো ইত্যাদি আরো অনেক কাজে প্লাগিন ব্যবহার করতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেসে আপনার মূল কাজ হল থিম কাস্টমাইজেশন শিখা। আমাদের ওয়েবসাইটে থিম কাস্টমাইজেশনের একটি প্র্যাকটিক্যাল টিউটোরিয়াল দেয়া আছে। এটি দেখে আপনি খুব সহজে ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করে কিভাবে ওয়েবসাইট বানাতে হয় তা শিখে ফেলতে পারবেন।
এভাবে আপনি লোকাল সার্ভারে কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট বানাবেন তা শিখবেন। তারপরে আপনার কাজ হবে লাইভ সার্ভারে কাজ করা। এজন্য আপনাকে ডোমেইন হোস্টিং কিনে ওয়েবসাইট বানাতে হবে। ডোমেইন হোস্টিং কিনতে আপনার সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা লাগবে।
ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আয় করবেন কিভাবে?
ভালোভাবে ওয়ার্ডপ্রেস শিখা হয়ে গেলে আপনার প্রথম কাজ হবে পোর্টফলিও ওয়েবসাইট তৈরি করা। আপনার কাস্টমাইজ করা ওয়েবসাইটগুলো পোর্টফোলিওতে সুন্দরভাবে সাজান। তারপর বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস যেমন ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিলান্সার ইত্যাদি আরো অনেক মার্কেটপ্লেসে আপনার প্রোফাইল তৈরি করুন এবং কাজের জন্য এপ্লাই করুন।
আমি আপনাকে আগেই বলেছি ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন এর প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। তাই আপনাকে কাজ পাওয়ার জন্য তেমন কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না। আপনি ভালোভাবে কাজ শিখতে পারলে আপনার কাজের অভাব হবে না। শুধুমাত্র থিম কাস্টমাইজেশন এর কাজ করে আপনি প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আয় করার সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। তাই ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায় তা অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে দেখে নিন। তাছাড়া ফ্রিলান্সিং কিভাবে শিখবো এই বিষয়ে আমি কমপ্লিট গাইডলাইন দিয়েছি।
Conclusion
তাহলে এই পোষ্ট থেকে বিস্তারিত জানতে পারলেন কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস শিখবেন। আশা করি আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। যদি আপনি আরো কিছু জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। এই পোষ্ট নিয়ে আপনার মতামত অবশ্যই কমেন্ট করে জানবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আয় করা পড়ালেখার পাশাপাশি ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয়ের খুবই ভাল একটি উপায়। কিভাবে ফেসবুক পেজ খুলতে হয়, ফেসবুক পেজ কিভাবে চালাতে হয়, ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম এবং ইউটিউবে ভিডিও ছাড়ার নিয়ম এই পোস্ট গুলো অবশ্যই পড়ুন। কেননা এগুলো আমি প্র্যাকটিক্যালি দেখিয়েছি যাতে আপনি খুব সহজেই শিখতে পারবেন এবং এগুলো শিখে আয় করতে পারবেন। ধন্যবাদ।
- সর্বাধিক দেখা ইউটিউব ভিডিও
- ডিজিটাল মার্কেটং
ভালো লাগলো খুব। পোর্টফোলিও বিষয়টি কি- বিস্তারিত জানতে চাই।
আপনি যেসব বিষয়ে দক্ষ, আপনার কাজের অভিজ্ঞতা এবং আপনি যে কাজ পারেন তার প্রমাণ উপস্তাপনের মাধ্যম হল পোর্টফলিও। ধরুন আপনি বলছেন আপনি ওয়ার্ডপ্রেস পারেন। আপনি যে আসলেই পারেন তার প্রমাণ কি? আমি তো কোন প্রমাণ ছাড়া বিশ্বাস করতে পারব না যে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস পারেন। তখন আপনি আমাকে যা দেখাবেন তা হচ্ছে আপনার পোর্টফলিও।
সুপ্রিয় জাহিদ ভাই, WordPress.com এর প্রদাণকৃত তথ্য অনুযায়ী সমগ্র বিশ্বের ৪০% ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। আপনি আর্টিকেল এর শুরুতে ৬০% এর কথা উল্লেখ করেছেন। বিষয়টির প্রতি একটু নজর দেয়া প্রয়োজন নয় কি? অন্যান্য তথ্যাদি পড়ে খুব ভালো লাগলো। সুলিখিত, সহজে মনে রাখার মতো।
অসাধারন একটা লেখা ছিলো। আশা করি ভবিষ্যতে আরো কিছু তথ্য পাবো।
এ জগতে চলমান প্রত্যেকে এত পরিষ্কার এবং প্রাজ্জল ভাবে বুঝাতে পারে যে আশ্চর্য্য হতে হয়। বর্তমান সময়ে এটা হচ্ছে। মাত্র ক’বছর আগেও এমন ধারার শেখানো আমরা পাই নি। কাজেই আজকের যিনি যুবক , তার আগামী যে কত বেশী উজ্জ্বল এবং সফলকাম হবেই , তা অনুমিত করা যায়।
সুন্দর একটি পোষ্ট ওয়ার্ডপ্রেস শিখার জন্য পরামর্শ পেলাম। ধন্যবাদ।