চুল ঘন করার উপায় naturally
চুল ঘন করার উপায় নিয়ে আজকের পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। নারী কিংবা পুরুষ উভয়ের সৌন্দর্য বর্ধনে চুল এক অন্যতম ভূমিকা পালন করে। প্রাত্যহিক জীবনে শহুরে লাইফস্টাইলে অধিকতর ব্যস্ততার কারণে আমরা অনেকেই চুল নিয়ে নানা সমস্যার মধ্যে পড়ি।এর মধ্যে অন্যতম হলো চুল ঝরে পড়া , চুলে টাক পড়ে যাওয়া, চুলের আগা ফেটে যাওয়া, শুস্ক হয়ে যাওয়া আজকাল এই ধরনের সমস্যা নতুন নয়। অনেকেরই সমস্যা এতটাই মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায় যে চুলের ঘনত্ব কমে যায় এবং মাথার তালু দেখা যেতে থাকে। যার কারণে অফিস কিংবা বাহিরে মানুষ নানা বিব্রতকর অবস্থার শিকার হয়।
এরকম বিব্রতকর অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে মানুষ ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে সুফল পেতে পারেন।
ঘন চুল আপনার সৌন্দর্য অনেক গুনে বাড়িয়ে তুলে। চুল ঘন করার উপায় আছে বেশ কিছু, যেগুলো আপনি নিয়মিত মানলে চুল ঘন হবে। এই পোস্ট থেকে আপনি চুল ঘন করার সব উপায় জানতে পারবেন।
চুল এর প্রধান উপাদান হলো কেরোটিন। ঘন আর সুন্দর চুল এর আকাংক্ষা কম-বেশি সবার ই থাকে কিন্তু তার পাশাপাশি চুল ঝরে যাবার কথা টা ও খুব পরিচিত ছেলে মেয়ে উভয়ের কাছে। আমদের প্রতি দিন যদি ১০০ টি চুল পড়ে তাহলে তা স্বাভাবিক ধরে নেয়া যায় কিন্তু তার বেশি চুল পড়া মানে তা অস্বাভাবিক এর কাতারে দাঁড়ায়।
Contents
চুল পাতলা হবার কিছু কারণ সমূহ
চুল পড়ার প্রধান কারণ হিসেবে আমাদের প্রতিদিনকার খাদ্যাভাসকে অনেকটাই দায়ী করা যায়। আমাদের অনেকেই প্রাত্যহিক জীবনে শাকসবজি অনেক কম খাই এবং ফাস্টফুড জাতীয় খাবার অনেক বেশি পরিমাণে গ্রহণ করি, এবং একই সাথে আমরা অনেক কম পরিমাণ পানি পান করি। আমাদের এই রকম খাদ্যাভাস চুল পড়ার অন্যতম একটি বড় কারন।
- শরীরে আমিষ এর অভাবে চুল গজাতে পারে না ফলে চুল পাতলা হয়ে যায়। মাথার ত্বকে নানাবিধ রোগ ও অতিরিক্ত খুশকির কারণে চুল পড়া বেড়ে যায়।
- চুল আঁচড়ানোর সঠিক কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। চুল অধিকতর জোরে আঁচড়ালে বা নখ দিয়ে চুলকানোর ফলে মাথার হেয়ার ফলিকল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এতে চুল ঝরে যায়। তাছাড়াও ভুলভাবে চুল বাধলে ও চুল ফেটে যায় ফলে চুল পাতলা হয়ে যায়।
- চুল বৃদ্ধির মূলে থাইরয়েড গ্রন্থি অনেক ভুমিকা রাখে,তাই থাইরয়েড এর প্রবলেম এ চুল বৃদ্ধি ব্যহত হয়ও পাতলা হয়ে যায়। মানসিক চাপে ও চুল পড়া বেড়ে যায়।
নানাবিধ হেয়ার স্টাইল এর উচ্চতাপে ও রিবন্ডিংও চুল পরা বা পাতলা করার ক্ষেত্রে দায়ী।
এমন আরো কারণ আমরা দার করতে পারি আর এইদিক গোলো অভারকামে পেতে পারি সুন্দর চুল। তবুও আলাদা আরো যত্নের প্রয়োজন হয়।
- চুলের বৃদ্ধি, ঘন, কালো,সুন্দর করার জন্য তেল এর কোনো বিকল্প নেই। তাই আমরা অলিভ অয়েল, নারিকেল তেল, ক্যাস্টর অয়েল, বাদাম তেল দিয়ে চুলে ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারি।
- চুল ঘন ও চুল এর গোরা শক্ত করতে মেহেদি,মেথি পিয়াজের রস ব্যবহার করা যায়।
- লেবুর রস চুল এর গোরা শক্ত করে ও খুশকি দূর করে। এলোভেরার রসও চুল ঘন করতে অনেক কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।
আমার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট চুল পড়া বন্ধ করার উপায় দেখে নিন। তাহলে চলুন এবার আমরা চুল ঘন করার উপায় জেনে নিই।
চুল ঘন করার উপায়
আপনার চুল নিয়মিত ম্যাসাজ করতে হবে।নিয়মিত ম্যাসাজ করার ফলে আপনার স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়বে । তাছাড়া আপনার মাথায় প্রাকৃতিক কিছু উপাদান ব্যবহার করতে হবে।যেমন :
- আদার রস,পেঁয়াজের রস, মেহেদির মাক্স, মেথির গুড়ো এইগুলো নিয়ম করে সপ্তাহে দুদিন ব্যবহার করলে দুই মাসের মধ্যে দেখবেন আপনার মাথার চুল এতটাই ঘন হয়ে গিয়েছে যে আপনি আপনার নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারবেন না।শুধু উপরে তেল লাগালে হবে না ভেতর থেকেও শরীরকে পুষ্টির যোগান দিতে হবে । কিছু খাবার আছে যেসব খাবার গুলো খেলে অতি দ্রুত চুল গজায় এবং চুল ঘন হয়।
- চুলের স্বাস্থ্য কে উন্নত করতে এবং চুলের গোঁড়া কে মজবুত করতে বাদাম তেলের গুন অপরিসীম। বাদামের উপকারিতা শুধুমাত্র খাদ্য হিসেবেই সীমাবদ্ধ নয়, চুল ও ত্বকের যাবতীয় সমস্যা দূর করার জন্য বাদাম যথেষ্ট উপকারী। এটা সত্যি যে, বাজারের কোনো দামি ক্রিম বা লোশন যা পারে না, বাদাম তেল একাই সেটা করে দেখায়। তাহলে আর দেরি না করে চলুন ঝটপট জেনে নেই ত্বক ও চুলের যত্নে বাদাম তেলের উপকারিতা কিভাবে কাজে লাগে –
চুলের যত্নে বাদাম বা আমন্ড তেল
চুলের যত্নে বাদাম বা আলমন্ড ওয়েল
১। বাইরের পলিউশন, ডাস্ট, কেমিক্যাল, হেয়ার কালার ইত্যাদির কারণে স্ক্যাল্পে অনেক সময় ইনফেকশন হয়ে যায়। যার ফলে অকালে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে। ড্যানড্রাফ এর সমস্যা দেখা দেয়। একমাত্র বাদাম তেলের নিয়মিত ব্যবহার পারে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে।
২। এই তেলের নিয়মিত ব্যবহার করলে মাথার ত্বকের রক্ত চলাচল ঠিক থাকে, চুলের পুষ্টি যোগায়, নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। প্রচুর পরিমাণে মশ্চারাইজার থাকায় আলমন্ড অয়েল বা বাদাম তেল একটি ন্যাচারাল কন্ডিশনার হিসেবেও কাজ করে।
৩। বর্তমান লাইফস্টাইল আর দূষণ আমাদের চুল দ্রুত হারে নষ্ট করে দিচ্ছে। আলমন্ড তেলের সঙ্গে অলিভ আর ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে মাথার চুলে লাগান। এতে শুধু স্প্লিট এন্ডের সমস্যাই দূর হবে না চুলের গোড়াও মজবুত হবে। সত্যি বলতে কী স্প্লিট এন্ড আর খুশকি চুলের এই দুটি প্রধান সমস্যার জন্য একবার আলমন্ড তেল অবশ্যই ব্যবহার করে দেখুন। হাতে নাতে ফল পাবেন। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে অন্তত দু’বার এই তেল মাথার চুল ও স্ক্যাল্পে মালিশ করা খুব জরুরী।
মাথায় খুশকি হওয়া চুলের একটি অন্যতম রোগ। খুশকি দূর করার উপায় জেনে নিন।
ত্বকের যত্নে বাদাম বা আমন্ড তেল
১। বাদাম তেল বা আমন্ড অয়েলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন “ই” রয়েছে, যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই তেল নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনি পেয়ে যাবেন চমকপ্রদ এবং গ্লোয়িং স্কিন।
২। এই তেলের নিয়মিত ব্যবহার আর্দ্রতাকে ত্বকের মধ্যে ধরে রাখে এবং ত্বকের পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে।
৩। চোখের নীচের ডার্ক সার্কেল রিমুভ করতে বাদাম বা আমন্ড তেল যাদুর মতন কাজ করে।
Conclusion
আশা করি এই পোস্টে চুল ঘন করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলেন এবং আপনার মনের সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। যদি আর কিছু জানতে চান তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করুন। আর আমাদের এই পোস্ট আপনার জন্য কতটুকু কার্যকরি তাও আমাদের কমেন্টে জানাবেন। ধন্যবাদ।