জানাজার নামাজের নিয়ম, ফজিলত ও বিধান
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। জানাজার নামাজ মূলত মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া ও ইস্তেগফার। জানাজায় লোক সংখ্যা বেশি হওয়া মুস্তাহাব এবং মুসল্লি সংখ্যা যত বাড়তে ততই ভালো। তবে কাতার বেজোড় হওয়া উত্তম। এই নামাজ কাজা পড়ার সুযোগ নেই, দেরী হয়ে গেলে ইমাম সাহেব যেখান থেকে আছেন সেখান থেকেই অনুসরণ করতে হবে। জানাযার নিয়ত করে চার তাকবিরের সহিত এ নামাজ আদায় করতে হয়।
Contents
জানাজার নামাজের নিয়ত
نَوَيْتُ اَنْ اُؤَدِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتِ صَلَوةِ الْجَنَا زَةِ فَرْضَ الْكِفَايَةِ وَالثَّنَا ءُ لِلَّهِ تَعَا لَى وَالصَّلَوةُ عَلَى النَّبِىِّ وَالدُّعَا ءُلِهَذَا الْمَيِّتِ اِقْتِدَتُ بِهَذَا الاِْمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
নিয়তের বাংলা উচ্চারণঃ “নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিল্লাহে তায়ালা আরবা আ তাকবীরাতে ছালাতিল জানাজাতে ফারজুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিল্লাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতে এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতে আললাহু আকবার।”
এখানে নিয়তে ‘লেহাযাল মাইয়্যেতে’ পুরুষ/ছেলে লাশ হলে পড়তে হবে, আর লাশ নারী/মেয়ে হলে ‘লেহাযিহিল মাইয়্যেতে’ বলতে হবে।
নিয়ত আরবিতে করতে না পারলে বাংলায় করলেও চলবে, আমি জানাযার ফরজে কিফায়া নামাজ চার তাকবিরের সাথে ক্বিবলামুখী হয়ে ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে মৃত ব্যক্তির (পুরুষ/মহিলা) জন্য দোয়া করার উদ্দেশ্যে আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।
ইমাম মৃত ব্যক্তি পুরুষ কিনা মহিলা জানিয়ে দিবেন। সে মতে প্রত্যেক মুসল্লী নিয়ত করার সময় বলে নিবে মৃত ব্যক্তির জন্য (পুরুষ/মহিলা) দোয়া উল্লেখ করে নিবে।
জানাযার নামাজে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা ও রাসূলের ওপর দরুদ পাঠ করা হয়। বাংলায় নিয়ত করলে তা বাংলায় বলে অথবা মনে মনে নিয়তে আনলেও চলবে।
জানাযার নামাজের নিয়ম
1. জানাজার নামাজে ইমাম মৃতের বুক বরাবর দাঁড়াবে। (বুখারি, হাদিস: ১২৪৬)
2. ইমামের পেছনে মুক্তাদিদের কাতার হবে। (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩১০২)
3. সবাই আল্লাহর ইবাদত হিসেবে জানাজার ফরজ আদায়ের নিয়ত করবে। (বুখারি, হাদিস: ১)
4. নিয়ত : মনে মনে নিয়ত করা ফরজ। মুখে পড়া ফরজ নয়। তাই মনে মনে শুধু এতটুকু নিয়ত করলেই হবে যে-
‘জানাজার নামাজ ফরজে কেফায়াহ, চার তাকবিরের সহিত এই ইমামের পেছনে আদায় করছি। নামাজ আল্লাহর জন্য দোয়া মাইয়্যেতের জন্য।
5. এরপর তাকবিরে তাহরিমা (اَللهُ اَكْبَر) বলবে এবং কান পর্যন্ত হাত ওঠাবে।
6. ছানাঃ
سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلاَ اِلَهَ غَيْرُكَ-
উচ্চারণঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা ঝাদ্দুকা ওয়া ঝাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
অর্থঃ হে আল্লাহ! সকল প্রশংসা আপনার। আপনি সব ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি হতে পবিত্র। আপনার নাম মঙ্গল ও বরকতপূর্ণ, আপনার মহত্ত্ব অতি বিরাট, আপনার প্রশংসা অতি মহত্ত্বপূর্ণ এবং একমাত্র আপনি ছাড়া আর কোনো প্রভু নেই।
7. এরপর (দ্বিতীয়) তাকবির বলে দরুদ পাঠ করবে। এই তাকবিরে হাত ওঠাবে না–
اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدُ، اَللّهُمَّ بَارِكْ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ।
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ছাল্লি আলা মুহাম্মাদিউঁ ওয়া আলা-আ-লি মুহাম্মাদিন কামা ছাল্লাইতা আলা ইবরা-হিমা ওয়া আলা আ-লি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিউঁ ওয়া আলা-আ-লি মুহাম্মাদিন কামা বা-রাকতা আলা ইবরা-হিমা ওয়া আলা আ-লি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।
অর্থঃ হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর শান্তি বর্ষণ কর, যেভাবে ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর শান্তি বর্ষণ করেছিলে। নিশ্চয়ই তুমি অতি প্রশংসিত মহিমান্বিত। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর বরকত দান কর, যেভাবে ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর বরকত দান করেছিলে। নিশ্চয়ই তুমি অতি প্রশংসিত মহিমান্বিত।’ (নাসাঈ ১২৯১)
8. তৃতীয় তাকবির বলে মৃত ব্যক্তি ও মুসলমানদের জন্য দোয়া করবে। তখনো হাত ওঠাবে না।
9. তারপর চতুর্থ তাকবির বলবে। তখনো হাত ওঠাবে না। (দারাকুতনী ১৮৫৩, ইবনে আবি শায়বা ৩/২৯৫)।
10. এরপর ডান ও বাম দিকে সালাম ফেরাবে। (সুনানে কুবরা ৭২৩৮)
11. ইমাম তাকবির উচ্চ স্বরে বলবে এবং বাকি দোয়া-দরুদ অনুচ্চ স্বরে পড়বে। মুক্তাদিরা সবই অনুচ্চ স্বরে তাকবির ও দোয়া-দরুদ পড়বে। (আবু দাউদ ২৭৮৪, সুনানে কুবরা ৭৪৩৩)
12. মৃত ব্যক্তি যদি বালেগ পুরুষ বা নারী হয় তবে এই দোয়া পড়া—
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا، وَمَيِّتِنَا، وَصَغِيرِنَا، وَكَبِيرِنَا، وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا، وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا، اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الْإِيمَانِ، وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الْإِسْلَامِ، اللَّهُمَّ لَا تَحْرِمْنَا أَجْرَهُ، وَلَا تُضِلَّنَا بَعْدَهُ
উচ্চারণঃ ‘আল্লাহুম্মাগফির লি হাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়েবিনা ওয়া ছগিরিনা ওয়া কাবিরিনা ওয়া জাকারিনা ওয়া উংছানা, আল্লাহুম্মা মান আহয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলাম ওয়া মান তাওয়াফফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহু আলাল ইমান। আল্লাহুম্মা লা তাহরিমনা আঝরাহু ওয়া লা তুদিল্লানা বাদাহু।’
অর্থঃ হে আল্লাহ, আমাদের জীবিত এবং মৃতদের, উপস্থিত এবং গায়েবদের, ছোট ও বড়দের এবং আমাদের নারী-পুরুষ সবাইকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের মধ্য থেকে যাকে জীবিত রাখবেন তাকে ইসলামের ওপরই জীবিত রাখুন। যাকে মৃত্যু দান করবেন তাকে ইমানের সাঙ্গেই মৃত্যু দিন। হে আল্লাহ! এর সাওয়াব থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না এবং এর পর আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করবেন না।’ (আবু দাউদ ৩২০১, তিরমিজি ১০২৪)
মৃত যদি ছেলে শিশু হয় তবে এই দোয়া পড়া-
اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرَطًاً , وَّاجْعَلْهُ لَنَا أَجْرًا وَّذُخْرًا , اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا شَفِيْعًا وَّمُشَفَّعًا
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাজআলহু লানা ফারাতঁও ওয়াজআলহু লানা আজরাঁও ওয়া জুখরাঁও ওয়াজআলহু লানা শা-ফিআও ওয়া মুশাফ্ফাআ।
অর্থঃ হে আল্লাহ! এ বাচ্চাকে আমাদের নাজাত ও আরামের জন্য আগে পাঠিয়ে দাও, তার জন্য যে দুঃখ তা আমাদের প্রতিদান ও সম্পদের কারণ বানিয়ে দাও, তাকে আমাদের জন্য সুপারিশকারী বানাও, যা তোমার দরবারে কবুল হয়।
আর মেয়েশিশু হলে এই দোয়া পড়া-
اللَّهُمَّ اجْعَلْهَا لَنَا فَرَطًاً , وَّاجْعَلْهَا لَنَا أَجْرًا وَّذُخْرًا , اَللَّهُمَّ اجْعَلْهَا لَنَا شَفِيْعَةً وَّمُشَفَّعَة
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাজআলহা লানা ফারাতঁও ওয়াজআলহা লানা আজরাঁও ওয়া জুখরাঁও ওয়াজআলহা লানা শা-ফিআতাঁও ওয়া মুশাফ্ফাআহ।
অর্থঃ হে আল্লাহ! এ বাচ্চাকে আমাদের নাজাত ও আরামের জন্য আগে পাঠিয়ে দাও, তার জন্য যে দুঃখ তা আমাদের প্রতিদান ও সম্পদের কারণ বানিয়ে দাও, তাকে আমাদের জন্য সুপারিশকারী বানাও, যা তোমার দরবারে কবুল হয়।
শিশুদের জন্য দোয়া
اللَّهُمَّ أَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْر
উচ্চারণঃ ‘আল্লাহুম্মা আইযহু মিন আযাবিল কবরি।’
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! তুমি এ ছেলেটিকে কবর আজাব থেকে রক্ষা করো।’ (মিশকাত ১৬৮৯)
اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا سلفا وفرطا وذخرا وَأَجرا
উচ্চারণঃ ‘আল্ল-হুম্মাজআলহু লানা সালাফান ওয়া ফারাত্বান ওয়া যুখরান ওয়া আজরান’
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! এ ছেলেটিকে (কেয়ামতের দিন) আমাদের অগ্রবর্তী ব্যবস্থাপক, রক্ষিত ভান্ডার ও সওয়াবের কারণ বানাও)।’ (মিশকাত ১৬৯০)
দোয়া দুইটি কারো জানা না থাকলে-
اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَات
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাগফির লিলমু’মিনিনা ওয়াল মু’মিনাত।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি মুমিন নারী-পুরুষ উভয়কে ক্ষমা করে দিন।
13. চতুর্থ তাকবিরের পর সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা। প্রথম তাকবির ছাড়া হাত না ওঠানো। নামাজিদের কাতার তিন, পাঁচ, সাত এভাবে বেজোড় হওয়া। (সুনানে কুবরা, হাদিস: ৭২৩৮, দারাকুতনী, হাদিস: ১৮৫৩)
জানাজার নামাজের ফরজ
জানাজার নামাজের ফরজ ছয়টি।
1. দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা
2. চার তাকবীর দেওয়া
3. সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করা
4. দরুদ পাঠ করা
5. মাইয়েতের জন্য খালেস অন্তরে দুআ করা
6. সালাম ফিরানো।
জানাজার নামাজের সুন্নত
জানাজার নামাজের সুন্নত পাঁচটি।
1. জামাত সহকারে সালাত আদায় করা
2. কমপক্ষে তিনটি কাতার হওয়া
3. ইমাম বা একাকী মুসল্লির জন্য পুরুষের মাথা ও মেয়েদের কোমর বরাবর দাঁড়ানো
4. ফাতিহা ব্যতীত অন্য একটি সূরা এবং হাদীসে বর্ণিত দোয়া সমূহ পাঠ করা
5. সালাত শেষে জানাজা উঠানাে পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা।
ইবনুন নাজ্জার আল-ফুতুহ, শারহুল মুনতাহা (বৈরূত : দার খিযর ১৪১৯/১৯৯৮) ৩/৫৫-৬৭; নাসাঈ হা/১৯৮৭, ৮৯।
বাকী সবই মুস্তাহাব। যদি ভুলক্রমে তিন তাকবীর হয়ে যায়, তবে পুনরায় ইমাম চতুর্থ তাকবীর দিবেন। যদি মুক্তাদীর কোন তাকবীর ছুটে যায়, তবে শেষে তাকবীর দিয়ে সালাম ফিরাবে। আর যদি না দেয় তাতেও দোষ নেই। ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৭৭।
জানাজার নামাজের ফযিলত
নবী কারীম (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘কোনো মুসলমান ব্যক্তির জানাজায় যে ব্যক্তি শরীক হয়ে নামাজ পড়ে এবং ওই ব্যক্তিকে কবরস্থ করে সে নামাজী ব্যক্তি দুই কীরাত নেকী পাবে। আর প্রত্যেক কীরাত উহুদ পাহাড় সমান নেকী। আর যে ব্যক্তি শুধু মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ পড়ে কিন্তু মাটি দেয় না সে এক কীরাত নেকী পাবে।’ (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
তিনি আরও এরশাদ করেছেন, ‘কোনো মুসলমানের জানাজায় যদি এমন চল্লিশজন লোক শরীক হয় যারা মহান আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেননি, তারা যদি মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাদের সুপারিশ নিশ্চয়ই কবুল করবেন।’ (সহীহ মুসলিম ও মিশকাত)
আল হাদীসে রয়েছে: ‘যে ব্যক্তি জানাজাকে নিয়ে চল্লিশ কদম চলবে আ্লাহ তার চল্লিশটি কবীরা গুনাহ্ মাফ করে দিবেন।’ এছাড়া, যে ব্যক্তি জানাযার চার‘টি পায়াকে কাঁধে নিবে আল্লাহ্ তা‘কে পরিপূর্ণ (স্থায়ী) ক্ষমা ক‘রে দিবেন।’ (আল জাওহারাতুন নায়্যারাহ্, ১ম খন্ড, ১৩৯ পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮২৩ পৃষ্ঠা। দুররে মুখাতার, ৩য় খন্ড, ১৫৮-১৫৯ পৃষ্ঠা।)।
- জানাজায় অংশগ্রহণে সুন্নাতে‘র অনুসর‘ণে আল্লাহর বান্দা‘র একটি হক আদায় হয়।
- জানাজায় অংশ গ্রহন করলে ১ ক্বীরাত নেকী পাওয়া যায়।
- কেউ মৃতব্যক্তির দাফনের উদ্দেশ্যে তার খাঁঁটিয়া কাঁঁধে নিয়ে ৪০ কদম হাঁঁটলে ৪০টি কবীরা গোনাহ ক্ষমা করা হয়।
- একইসাথে মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ আদায় ও মৃত ব্যক্তির দাফন করলে মোট ২ ক্বীরাত নেকী পাওয়া যায়।
জানাজার নামাজের বিধান
প্রত্যেক মুসলিম আহলে কিবলার উপর জানাযার সালাত ফরজে কেফায়া। ইবনু মাজাহ হা/১৫২৬ জানায়েয’ অধ্যায়-৬।
মুসলমানদের কেউ জানাযা পড়লে উক্ত ফরজ আদায় হয়ে যাবে। না পড়লে সবাই দায়ী হবে। ছালাত হিসাবে অন্যান্য সালাতের ন্যায় ওযু, কিবলা, সতর ঢাকা ইত্যাদি সালাতে জানাজার শর্তাবলীর অন্তর্ভুক্ত। তবে পার্থক্য এই যে, জানাযার সালাতে কোন রুকু-সিজদা বা বৈঠক নেই এবং এ সালাতের জন্য নির্দিষ্ট কোন ওয়াক্ত নেই। বরং দিনে-রাতে সকল সময় এমনকি নিষিদ্ধ তিন সময়েও পড়া যায়। ইবনু মাজাহ হা/১৫১৯; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৮২-৮৩, ২৭১।
অবশ্য দুই প্রকার মাইয়্যেতের জানাযা এ নির্দেশের আওতাভুক্ত নয়। অর্থাৎ তাদের জানাযা পড়া ওয়াজিব নয়।
প্রথমঃ নাবালক শিশু।
কারণ, নবী সঃ তার শিশু পুত্র ইব্রাহীম রাঃ এর জানাযা পড়েননি। মা আয়েশা রাঃ বলেন, নবী সঃ এর পুত্র ১৮ মাস বয়সে মারা যায়। তিনি তার জানাজা পড়েন নি।
দ্বিতীয়ঃ শহীদ।
কেননা, নবী সাঃ উহুদ প্রভৃতি যুদ্ধের শহীদদের জানাযা পড়েননি বলে বর্ণনা পাওয়া যায়। অবশ্য তার নামায না পড়াটা উক্ত ধরনের মাইয়্যেতের অবিধেয় হওয়ার নির্দেশ দেয় না।
আরো পড়ুনঃ