বাড়ি ও বাগান

মশা তাড়ানোর উপায় কি? বাড়ি থেকে মশা, পোকামাকড় ও ইঁদুর তাড়ানোর সহজ উপায় জেনে নিন

বাড়ি থেকে মশা, পোকামাকড় ও ইঁদুর তাড়ানোর সহজ উপায়ঃ

আজ আমরা আপনাকে এমন কিছু হ্যাকস সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি যা আপনার ঘরের কীটপতঙ্গের সমস্যা কমিয়ে দেবে এবং গ্রীষ্ম ঋতুতে মশা, মাছি, পোকামাকড় এবং ইঁদুরের উপদ্রব দূর করবে।

মশা, মাছি এবং পোকামাকড় থেকে পরিত্রাণের উপায়

এই হ্যাকটি বিশেষ করে উড়ন্ত পোকামাকড়কে প্রভাবিত করে। প্রতিদিন ৫ মিনিট সময় নিয়ে এটি করলে পোকামাকড় ও মশা ইত্যাদি আপনার ঘর থেকে পালিয়ে যাবে।

উপাদান-

কার্যবিধি-

  1. প্রথমে কর্পূর পিষে নিম বা সরিষার তেলে মিশিয়ে নিন।
  2. তেজপাতা নিয়ে একটি মাটির পাত্রে রাখুন। এর সঙ্গে কর্পূর ও তেলের মিশ্রণ মেশান।
  3. এখন এটিকে আগুনে রাখুন তারপর আগুন নিভিয়ে দিন যাতে এই মিশ্রণটি ধীরে ধীরে ধোঁয়ায় পরিণত হয়।
  4. যেকোনো বন্ধ ঘরে ১৫ মিনিট রাখুন।
  5. মাছি, মশা, পোকামাকড় ইত্যাদি এই ধোঁয়া থেকে পালিয়ে যাবে। আপনি প্রতিদিন সন্ধ্যায় এটি করতে পারেন।

তেলাপোকা, ইঁদুর এবং পিঁপড়া থেকে পরিত্রাণের উপায়

আপনি যদি মাটিতে হাঁটতে থাকা পোকামাকড় এবং ইঁদুরের উপদ্রব থেকে পরিত্রাণ চান তবে এই হ্যাকটি অনুসরণ করুন।

উপাদান-

  • সামান্য ময়দা
  • চিনি
  • বোরিক এসিড
  • সামান্য তেল

কার্যবিধি-

  1. এই সবগুলো উপাদান মেশান।
  2. এমনভাবে মিশাতে হবে যাতে বোরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকে।
  3. এবার এর থেকে ছোট ছোট বল বানিয়ে রান্নাঘরের সিঙ্কের নিচে বা অন্য কোনো জায়গায় রাখুন যেখান থেকে বেশি পোকা বা ইঁদুর আসে।
  4. পোকামাকড় বা ইঁদুররা এটি খেয়ে ফেলবে এবং আর ফিরে আসবে না।

পোকামাকড় প্রতিশেধক স্প্রে

পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঘরোয়া পদ্ধতিতে একধরনের স্প্রে তৈরি করা যায় যা বেশ উপকারি।

উপাদান-

  • পানি
  • ৩-৪ চামচ সাদা ভিনেগার
  • ১ চা চামচ কর্পূর এর গুঁড়া
  • সামান্য পরিমাণ ডেটল
  • ১ চা চামচ লবণ
  • স্প্রে বোতল

কার্যবিধি-

  1. এই সব জিনিস মিশিয়ে, ভালো করে নেড়ে স্প্রে বোতলে সংরক্ষণ করুন।
  2. এখন এটি স্প্রে করুন যেখান থেকে পোকা বেশি আসে।
  3. এর গন্ধ থেকে পোকামাকড় পালাতে শুরু করবে।

প্রাকৃতিকভাবে মশা তাড়ানোর উপায় কি

রাতে মশার কামড় যে কারও জীবনকে কঠিন করে তুলতে পারে। ঘরে মশা থাকলে শুধু ঘুমেরই ব্যাঘাত ঘটে না, অনেক রোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। মশার কামড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো খারাপ রোগ হয়। আজকাল কয়েল এবং অন্যান্য মশা তাড়ানোর তরল রিফিলও মশার উপর কাজ করে না। এই পন্যগুলো শুধুমাত্র কিছুক্ষণের জন্য উপশম দেয়। তাদের প্রভাব কমে গেলে, মশা আবার কামড়াতে শুরু করে।

তাই আপনি মশা তাড়াতে কিছু কার্যকর ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন। তাহলে এখান থেকে জেনে নিন মশা তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়গুলো কি কি।

১। কর্পূর-

যদি রাতে মশা আপনাকে বিরক্ত করে এবং আপনি কয়েল বা অন্যান্য রাসায়নিক জিনিস ব্যবহার করতে না চান তবে কর্পূর ব্যবহার করতে পারেন। ঘরে কর্পূর পুড়িয়ে প্রায় ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। এতে মশা তাৎক্ষণিকভাবে চলে যাবে।

২। নিমের তেল-

মশা তাড়াতে নিমের তেল ব্যবহার করা যায়। এর জন্য সমপরিমাণ নিম ও নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। এবার এই তেল শরীরে ভালো করে মাখুন। এতে করে প্রায় আট ঘণ্টা মশা আপনার কাছে ঘোরাফেরা করবে না।

৩। ইউক্যালিপটাস তেল

যদি দিনেও মশা আপনাকে কামড়ায়, তাহলে আপনি ইউক্যালিপটাস তেল ব্যবহার করতে পারেন। ইউক্যালিপটাস তেলে সমপরিমাণ লেবু মিশিয়ে এই তেল শরীরে লাগান। এর তীব্র গন্ধের কারণে মশা আপনার আশেপাশেও ঘোরাফেরা করবে না।

আরো পড়ুনঃ লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা

৪। রসুন-

ঘরে মশা প্রবেশ ঠেকাতে রসুন ব্যবহার করুন। রসুনের ঘ্রাণে মশা পালিয়ে যায়। এ জন্য রসুন পিষে পানিতে ফুটিয়ে নিন। এবার এই পানি ঘরের প্রতিটি কোণায় ছিটিয়ে দিন। এতে বাইরে থেকে মশা ঘরে ঢুকবে না।

আরো পড়ুনঃ রসুনের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কাঁচা ও ভাঁজা রসুন, রাতে রসুন খাওয়ার উপকারিতা এবং নিয়ম, ত্বকের যত্নে রসুনঃ জেনে নিন কোন সমস্যায় কীভাবে ব্যবহার করবেন

৫। ল্যাভেন্ডার-

ল্যাভেন্ডার মশা তাড়ানোর আরেকটি ঘরোয়া পদ্ধতি। ল্যাভেন্ডারের ঘ্রাণ খুব শক্তিশালী। মশা এর গন্ধ সহ্য করতে পারে না। আপনি বাড়িতে ল্যাভেন্ডার রুম ফ্রেশনার ব্যবহার করে এর প্রভাব দেখতে পারেন।

ঘরের পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন

আপনি যদি মনে করেন যে আপনার ঘরে আরও পোকামাকড় আসছে, তবে আপনার এই বিষয়গুলি মাথায় রাখা উচিৎ।

রান্নাঘরে কাজ করার সময় যদি কোথাও খাবার পড়ে যায় বা রান্নাঘর নোংরা হয়ে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করুন।

ড্রয়ারে কখনই ভেজা পাত্র রাখবেন না। তাদের সবসময় শুকনো এবং পরিষ্কার রাখুন।

বাড়িতে যদি প্রচুর পিঁপড়া থাকে, তবে সামান্য হলুদ গুঁড়ো ছিটিয়ে দিলেও উপকার পাওয়া যায়।

বাড়িতে শুকনো নিম পাতা পোড়ালেও উপকার পাবেন।

আরো পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা, তুলসী পাতার উপকারিতা, ঘরে টিকটিকি থাকলে কি হয়?

5/5 - (17 votes)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button