সূরা মাউন বাংলা উচ্চারণ সহ, অর্থ ও শানে নুযুল
সূরা মাউন মক্কায় নাযিল হয়েছে। সূরা আল মাউন কুরআনের ১০৭ তম সূরা। সূরা আল মাউন আয়াত সংখ্যা ৭ টি।
Contents
সূরা মাউন আরবির উচ্চারণ
أَرَءَيْتَ ٱلَّذِى يُكَذِّبُ بِٱلدِّينِ
فَذَٰلِكَ ٱلَّذِى يَدُعُّ ٱلْيَتِيمَ
وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ ٱلْمِسْكِينِ
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ
ٱلَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ
ٱلَّذِينَ هُمْ يُرَآءُونَ
সূরা মাউন এর বাংলা উচ্চারণ
বাংলা উচ্চারণঃ আরাআইতাল্লাযী ইউকাযযি বুবিদ্দীন।
ফাযা-লিকাল্লাযী ইয়াদু‘‘উল ইয়াতীম।
ওয়ালা-ইয়াহুদ্দু‘আলা-তা‘আ-মিল মিছকীন। ফাওয়াইঁলুলিলল মুসাল্লীন।
আল্লাযীনাহুম ‘আন সালা-তিহিমি।
ছা-হূন। আল্লাযীনা হুম ইউরাঊনা।
ওয়া ইয়ামনা‘ঊনাল মা-‘ঊন।
সূরা মাউন এর বাংলা অর্থ
আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচারদিবসকে মিথ্যা বলে? সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলা ধাক্কা দেয় এবং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না। অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর, যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে এবং নিত্য ব্যবহার্য্য বস্তু অন্যকে দেয় না।
সূরা মাউন এর শানে নুযূল
এই সূরায় ধ্বংসের বার্তা সকল নামাজিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে যারা তাদের নামাজকে অবহেলা করে এবং লোক দেখানো নামাজ আদায় করে। এ ধরনের মুনাফিক মদিনায় পাওয়া যেত। কারণ ইসলাম এবং ইসলামের অনুসারীরা সেখানে এমন এক মাত্রার ক্ষমতা অর্জন করেছিল যে অনেক লোককে পরিস্থিতির জরুরীতায় বিশ্বাস করতে হয়েছিল এবং তারা মসজিদে আসতে বাধ্য হয়েছিল। তারা জামাতে নামাজে যোগ দিতেন এবং লোক দেখানো নামাজ আদায় করতেন। এভাবে তারা মুসলমানদের মধ্যে গন্য হতে চেয়েছিল। অন্যদিকে মক্কায় মানুষের নামাজ পড়ার পরিবেশ ছিল না। সেখানে মুমিনদের জন্য জামায়াতের সাথে নামাজের ব্যবস্থা করা কঠিন ছিল। নামাজ গোপনে আদায় করতে হতো। যদি কেউ জনসম্মুখে প্রার্থনা করতেন, তিনি বড় সাহস দেখাতেন। তার মৃত্যুর সম্ভাবনা ছিল। সেখানে যে ধরনের মুনাফিক দেখা গেছে তারা বিশ্বাসী লোকদের দল বা জনসম্মুখে প্রার্থনা করে না। বরং তারা জানতেন এবং মেনে নিয়েছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন প্রকৃত নবী। কিন্তু তাদের কেউ কেউ তাদের শাসন ক্ষমতা, প্রভাব এবং নেতৃত্ব বজায় রাখার জন্য ইসলাম গ্রহণে অনিচ্ছুক ছিলেন। আবার, কিছু লোক ইসলাম গ্রহণ করে তাদের চোখের সামনে মুসলমানদের বিপদে পড়তে দেখে নিজেরাও বিপদে পড়তে প্রস্তুত ছিল না। এরই প্র্রেক্ষাপটে সূরা মাউন নাযিল হয়েছিল।
সূরা মাউন এর ফজিলত
একজন ব্যক্তির পরকালে বিশ্বাস না হলে তার মধ্যে কোন ধরনের নৈতিকতার জন্ম হয় তা বর্ণনা করাই এর মূল বিষয়। এখানে ২ এবং ৩ নং আয়াতে কাফেরদের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে যারা পরকালকে প্রকাশ্যে অস্বীকার করে।
এবং শেষের চারটি আয়াতে মুনাফিকদের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে যাদের মুসলমান বলে মনে হয় কিন্তু তাদের পরকাল, এর শাস্তি এবং পুরস্কার ও পাপের পূর্ণতা সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। পরকালে বিশ্বাস ছাড়া মানুষের মধ্যে শক্তিশালী ও পবিত্র চরিত্র গড়ে তোলা কোন ভাবেই সম্ভব নয়।
পাপকাজ সমাজকে অন্ধকারে নামিয়ে আনে। পাপকাজের প্রচার ও প্রসার মানুষের ঈমানকে দূর্বল করে দেয়। মানুষকে নির্লজ্জায় নামিয়ে দেয়। ইসলামে সকল ধরনের অশ্লীলতাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘বলে দাও, আমার পালনকর্তা হারাম করেছেন সকল প্রকাশ্য ও গোপনীয় অশ্লীলতাকে, আর পাপ ও অসংগত বিরোধিতা এবং কোনো কিছুকে আল্লাহর সঙ্গে শরিক করাকে, যার কোনো সনদ তিনি পাঠাননি। আর আল্লাহ সম্পর্কে এমন কিছু বলা, যা তোমরা জানো না।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩৩)
আরো পড়ুনঃ