সূরা আদ দুহা বাংলা অনুবাদ, উচ্চারণ, অর্থ ও শানে নুযুল
সূরা আদ দুহা বাংলা অনুবাদ, উচ্চারণ, অর্থ ও শানে নুযুল জেনে নিন এই পোস্টে। সূরা আদ-দুহা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। সূরা আদ-দুহা কোরআন মাজিদের ৯৩ তম সূরা। এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ১১ টি।
সূরা আদ-দুহা এর আরবী উচ্চারণঃ
وَٱلضُّحَىٰ
وَٱلَّيْلِ إِذَا سَجَىٰ
مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلَىٰ
وَلَلْءَاخِرَةُ خَيْرٌ لَّكَ مِنَ ٱلْأُولَىٰ
وَلَسَوْفَ يُعْطِيكَ رَبُّكَ فَتَرْضَىٰٓ
أَلَمْ يَجِدْكَ يَتِيمًا فَـَٔاوَىٰ
وَوَجَدَكَ ضَآلًّا فَهَدَىٰ
وَوَجَدَكَ عَآئِلًا فَأَغْنَىٰ
فَأَمَّا ٱلْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ
وَأَمَّا ٱلسَّآئِلَ فَلَا تَنْهَرْ
وَأَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ
সূরা আদ-দুহা এর বাংলা উচ্চারণঃ
১) ওয়াদদু হা-।
২) ওয়াল্লাইলি ইযা-ছাজা-।
৩) মা-ওয়াদ্দা‘আকা রাব্বুকা ওয়ামা-কালা-।
৪) ওয়ালাল আ-খিরাতুখাইরুল্লাকা মিনাল ঊলা-।
৫) ওয়া লাছাওফা ইউ‘তীকা রাব্বুকা ফাতারদা-।
৬) আলাম ইয়াজিদকা ইয়াতীমান ফাআ-ওয়া-।
৭) ওয়া ওয়াজাদাকা দাল্লান ফাহাদা-।
৮) ওয়া ওয়াজাদাকা ‘আইলান ফাআগনা-।
৯) ফাআম্মাল ইয়াতীমা ফালা-তাকহার।
১০) ওয়া আম্মাছ ছাইলা ফালা-তানহার।
১১) ওয়া আম্মা-বিনি‘মাতি রাব্বিকা ফাহাদ্দিছ।
সূরা আদ-দুহা এর বাংলা অনুবাদঃ
১) শপথ পূর্বাহ্নের,
২) শপথ রাত্রির যখন তা গভীর হয়,
৩) আপনার পালনকর্তা আপনাকে ত্যাগ করেনি এবং আপনার প্রতি বিরূপও হননি।
৪) আপনার জন্যে পরকাল ইহকাল অপেক্ষা শ্রেয়।
৫) আপনার পালনকর্তা সত্বরই আপনাকে দান করবেন, অতঃপর আপনি সন্তুষ্ট হবেন।
৬) তিনি কি আপনাকে এতীমরূপে পাননি? অতঃপর তিনি আশ্রয় দিয়েছেন।
৭) তিনি আপনাকে পেয়েছেন পথহারা, অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন।
৮) তিনি আপনাকে পেয়েছেন নিঃস্ব, অতঃপর অভাবমুক্ত করেছেন।
৯) সুতরাং আপনি এতীমের প্রতি কঠোর হবেন না;
১০) সওয়ালকারীকে ধমক দেবেন না।
১১) এবং আপনার পালনকর্তার নেয়ামতের কথা প্রকাশ করুন।
সূরা আদ-দুহা এর শানে নুযুল
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের নিকট কিছুদিন ওহী নাজিল বন্ধ থাকলে বিরোধীরা মনে করে এবং প্রচার করে যে, রাসূলের প্রতি যে উৎস হতে ওহী নাজিল হতো, সে উৎস হতে ওহী নাজিল বন্ধ হয়ে গেছে। এই প্রেক্ষিতে নবীজি (সা.)-কে সান্ত্বনা ও স্বস্তি দেয়ার জন্যে মহান আল্লাহ তায়ালার তরফ হতে সূরা আদ-দুহা নাজিল হয়েছিল।
মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরাআন শরীফে বলেন, ‘তোমার রব তোমাকে পরিত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি নারাজও হননি’
জন্দুব ইবনে আবদুল্লাহ আল বাজালী ( রা.) রেওয়ায়াত করেন, যখন জিব্রাইল আলাইহিস সালামের আসার সিলসিলা থেমে গেলো, মুশরিকরা বলতে শুরু করলো: মুহাম্মাদকে ( সালাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামকে) তাঁর রব পরিত্যাগ করেছেন। (ইবনে জারীর, তাবারানী, আবদ ইবনে হুমাইদ, সাঈদ ইবনে মনসূর ও ইবনে মারদুইয়া)
মুশরিকরা অপপ্রচার চালাতে লাগলো, বলতে লাগলো যে, তার রব তার প্রতি নারাজ হয়ে গেছেন এবং তিনি তাকে পরিত্যাগ করেছেন।
আরেক রেওয়াআতে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের চাচী, আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামীলের ঘর ছির তাঁর ঘরের সঙ্গে লাগোয়া। সে তাঁকে ডেকে বললো, ‘মনে হচ্ছে তোমার শয়তান তোমাকে পরিত্যাগ করেছে।’
এই সূরার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালা মহানবীকে সুখবর দেন এবং মহানবীর জন্য ভবিষ্যতের মঙ্গলবার্তা দেন ও আখিরাতের মর্যাদা ও পুরস্কারের কথা বলেন। মহান আল্লাহ তায়ালা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামকে বলেন, ‘আখিরাতে তুমি যে মর্যাদা লাভ করবে তা দুনিয়ায় তোমার অর্জিত মর্যাদা থেকে অনেক গুণ বেশি হবে।’
আরো পড়ুনঃ