অনলাইন আর্নিং

ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে আয় করা যায়

ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে আয় করা যায় এই সম্পর্কে আজকের পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এবং কিভাবে আপনারা আয় করতে পারবেন তার পূর্ণাংগ গাইডলাইন দেওয়া হবে।

অনলাইনে আয়ের বিষয়ে সবাই কম বেশি জানেন। আমি অনেককেই দেখেছি, অনলাইনে আয় করার জন্য দিনরাত স্ট্রাগল করে যাচ্ছেন। কোনভাবেই আয় করতে পারছেন না। আমার কাছে অনেকেই এ ব্যপারে সাজেশন্স চেয়েছেন। আমি যে জিনিস টা সবার মাঝে দেখলাম তা হল পর্যাপ্ত জ্ঞ্যানের অভাব। অনলাইনে আয় করতে হলে অবশ্যই আপনি যে বিষয়ে কাজ করবেন সে বিষয়ে আপনার অনেক বেশি জ্ঞ্যান থাকতে হবে এবং যথেষ্ট দক্ষতা থাকতে হবে।

অনলাইনে আয় করার সবচেয়ে সহজ এবং দীর্ঘস্থায়ী উপায় হলো একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করে নিয়মিত ব্লগিং করে আয় করা। আমার আগের বিভিন্ন পোস্টে আপনারা এ বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ন তথ্য জেনেছেন। আজকের পোস্টে আমি আপনাদের শিখাবো ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে আয় করা যায়। চলুন তাহলে শুরু করা যাক,

ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে আয় করা যায়

আপনি একটি সুন্দর ওয়েবসাইট তৈরি করে তাতে ভিজিটর আনতে পারলে অনেক গুলো উপায়ে আয় করতে পারবেন। আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনতে হলে ভিজিটরদের জন্য প্রয়োজনীয় কন্টেন্ট থাকতে হবে আপনার ওয়েবসাইটে। একটি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ট্রাফিক আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করতে আসলে আপনি আপনার কন্টেন্টের ভিতরে ওই ক্যাটাগরির এড দেখিয়ে বা আপনার নিজের প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন দিয়ে অথবা রিলেভেন্ট কোন সার্ভিস সেল করার বিজ্ঞাপন দিয়ে আপনার কাংখিত ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন।

বেশ কিছু দিক বিবেচনা করে ওয়েবসাইট থেকে আয় করার সবচেয়ে সহজ এবং জনপ্রিয় উপায় হলো গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে আয় করা। বেশিরভাগ মানুষ এবং আমি নিজে গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে আমার ওয়েবসাইট থেকে আয় করি। এখন আপনিও যদি এডসেন্স ব্যবহার করে আয় করতে চান, তাহলে কিভাবে শুরু করতে হবে চলুন দেখে নিই,

ওয়েবসাইট থেকে আয় করার উপায়

বুঝতেই পারছেন সবার আগে আপনার একটি ওয়েবসাইট লাগবে। আপনি যেহেতু স্বপ্ন দেখছেন মাস শেষে আপনার লাখ টাকা ইনকাম থাকবে, সেহেতু আপনি কখনোই অনলাইনে ফ্রি কিছু খুজতে যাবেন না। আপনি নিজেকে সবার সামনে প্রাউডলি উপস্থাপন করুন। যদিও বাংলাদেশের টপ কিছু সাইট দেখতে পাবেন যারা ফ্রি রিসোর্স ব্যবহার করে প্রচুর ভিজিটর টানতে পেরেছে এবং বেশ ভালো মানের ইনকাম করছে। যা ই হোক আমি আপনাদের কখনোই ফ্রি ওয়েবসাইটে কাজ করার জন্য বলবো না।

প্রথমেই আপনি অডিয়েন্স টার্গেট করুন। আপনি কাদের জন্য লিখবেন। একটি নিশ বাছাই করুন।

একটি ওয়েবসাইট বানাতে আপনার ডোমেইন এবং হোস্টিং প্রয়োজন। ডোমেইন হলো আপনার ওয়েবসাইটের নাম এবং হোস্টিং হলো এক ধরনের মেমরি বা পিসি, যেখানে আপনার ওয়েবসাইটের সবকিছু থাকবে। প্রথমেই আপনি আপনার ওয়েবসাইটের সুন্দর নাম বা ডোমেইন নেম ঠিক করে নিন। নেমচিপ থেকে আপনি সবচেয়ে কম দামে ডোমেইন এবং শেয়ার্ড হোস্টিং কিনে নিতে পারেন। তবে ওয়েবসাইটের ভালো স্পিড এবং পার্ফমেন্সের জন্য আমি আপনাকে সাজেস্ট করব ভিপিএস হোস্টিং কিনে নেয়ার জন্য। এজন্য cloudways থেকে ম্যানেজড ভিপিএস হোস্টিং কিনে নিতে পারেন।

ডোমেইন হোস্টিং কেনার পর ওয়েবসাইট সেটাপ করে ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করে নিন। এটি একেবারেই সহজ কাজ। এবার আপনার ওয়েবসাইটের জন্য কিছু পোস্ট তৈরি করুন। তারপর আপনার কাজ হবে ওয়েবসাইট টা সুন্দর এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি করে ডিজাইন করে নেয়া। এর জন্য আপনি আমার আগের টিউটোরিয়াল থেকে ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন দেখে নিন। তাছাড়া ইউটিউবে আপনি প্রচুর ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখতে পাবেন।

এবার আপনি ব্লগে পোস্ট করার নিয়ম দেখে নিন। কি ধরনের পোস্ট লিখবেন আইডিয়া না পেলে আমার নিচের পোস্ট টি আপনাকে অনেক বেশি হেল্প করবে।

আপনার ওয়েবসাইটে মোটামুটি ৩০টা পোস্ট পাবলিশ করার পরে গুগল এডসেন্সের জন্য এপ্লাই করুন। আপনার ওয়েবসাইটে কোন প্রকার কপি কন্টেন্ট না থাকলে এবং ডিজাইন, স্ট্রাক্টচার ঠিক থাকলে ১ সপ্তাহের মধ্যে এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন। তারমানে এখন আপনার ওয়েবসাইট কেউ ভিজিট করতে আসলে এড দেখতে পাবে। আর এডে ক্লিক করলেই আপনার ইনকাম হতে থাকবে।

১মাসের মধ্যেই আপনার ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম আসা শুরু করবে। তবে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০০ ভিজিটর আনার আগ পর্যন্ত ইনকামের কথা মাথায় নিবেন না।

ওয়েবসাইটে ইনকাম আসার জন্য আপনার সবচেয়ে বড় যে বাধার সম্মুখীন হতে হবে তা হলো ওয়েবসাইটের ভিজিটর। প্রথম অবস্থায় আপনি একেবারেই ভিজিটর পাবেন না। আমি আমার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার জন্য যা যা করতাম তা একটি পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। নিচের পোস্টে দেখে আসুন।

আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসবে মূলত গুগল সার্চ রেজাল্ট থেকে। আপনার ওয়েবসাইটের পোস্ট গুগল সার্চ রেজাল্টের প্রথম পজিশনে নিয়ে আসার জন্য আর্টিকেল লেখার নিয়ম মেনে লিখতে হবে। আমার পোস্টে দেখে আসুন। আপনি যখন ওয়েবসাইট নিয়েছেন তখন নিশ্চয়ই একটি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির অডিয়েন্স টার্গেট করেছেন, যাদের জন্য আপনি লিখবেন, যারা আপনার পোস্ট পড়বে। আপনার অডিয়েন্স কি ধরনের কিওয়ার্ড লিখে গুগলে সার্চ করে তা জানার জন্য নিচের পোস্ট পড়ে আসুন।

এখন আপনি যে কিওয়ার্ড টার্গেট করে পোস্ট লিখছেন সে কিওয়ার্ডের জন্য আপনার ওয়েবসাইট গুগল সার্চ রেজাল্টের প্রথম পজিশনে নিয়ে আসতে হবে। তাছাড়া আপনি কখনোই ওয়েবসাইটে ভিজিটর পাবেন না। এজন্য আপনাকে এসইও কি জানতে হবে এবং শিখতে হবে। আমাদের ওয়েবসাইটে এসইও বাংলা টিউটোরিয়াল কোর্স থেকে সম্পূর্ণ ফ্রি এসইও শিখে নিতে পারবেন।

এইভাবে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে যত বেশি ট্রাফিক আনতে পারবেন, তত বেশি আয় করতে পারবেন। ব্লগে ট্রাফিক বাড়ানোর অন্যতম উপায় হলো আপনার বাছাই করা শুধুমাত্র একটি নিশের উপর নিয়মিত পোস্ট লেখা। আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন এসেছে এভাবে আপনি কত টাকা আয় করতে পারবেন? নিচের পোস্টে দেখে নিন।

বাংলা ওয়েবসাইট থেকে আয়

এতক্ষণ আমি আপনাদের যা কিছু বলেছি তা হলো সম্পূর্ণ বাংলায় লেখালেখি করার ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করার কথা। আপনার যদি ইংরেজিতে ভালো লেখার দক্ষতা থাকে তাহলে অবশ্যই ইংরেজিতে ব্লগিং করুন। তখন আপনি বিদেশি অডিয়েন্সও টার্গেট করতে পারবেন। আপনারা যারা আমার আগের পোস্ট গুলো পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন, বাংলায় ব্লগিং করে আপনি যে পরিমাণ আয় করতে পরবেন, ইংরেজিতে করলে তার থেকে কমপক্ষে দশগুন বেশি আয় করতে পারবেন।

বাংলা ওয়েবসাইট থেকে আয় করার আরেকটি ভালো উপায় হলো ই-কমার্স ব্যবসা করা। আপনার ব্লগে যেসব ট্রাফিক আসছে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন আপনার ব্লগ পোস্টে দেখাতে পারেন। অবশ্যই আপনার কন্টেন্টের সাথে রিলেভেন্ট হতে হবে। মনে করুন আপনি লিখেছেন ব্রণ দূর করার উপায়, তাহলে এই পোস্টে ব্রণ দূর করার কোন প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন দিয়ে দিন। তাহলে যারা আপনার ব্লগ পড়ছে ভালো লাগলে আপনার প্রোডাক্ট কিনবে।

আপনার নিজের কোন প্রোডাক্ট না থাকলেও অন্য কোন ই-কমার্স শপের এফিলিয়েট লিঙ্ক শেয়ার করে আয় করতে পারেন। তাছাড়া প্রযুক্তি বিষয়ক এফিলিয়েট লিংক অথবা আপনি যদি কোন কোর্সের বিষয়ে লিখেন, ওই কোর্স সেল করার এফিলিয়েট লিঙ্ক থেকেও আয় করতে পারেন।

আমাদের পরামর্শ

আপনি আপনার ওয়েবসাইট থেকে আদৌ আয় করতে পারবেন কি না, তা সম্পূর্ন নির্ভর করছে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে কতগুলো ট্রাফিক ড্রাইভ করতে পারছেন তার উপর। যদি পুরো পোস্ট ভালো করে পড়ে থাকেন এবং পোস্টের সাথে রিলেটেড যেসব পোস্টের লিঙ্ক দেয়া আছে সবগুলো পোস্ট আপনার পড়া হয়, তাহলে এতক্ষণে আপনি সবকিছু জানেন। তাই ইনকামের দিকে মনোযোগ না দিয়ে কিভাবে ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বাড়ানো যায়, পোস্ট বাড়ানো যায় সেদিকে মনোযোগ দিন। কম্পিটিশনে আপনাকে টিকে থাকতে হবে, নিয়মিত আপডেট থাকতে হবে, গুগল সার্চ রেজাল্টের প্রথম পজিশনে আপনার ওয়েবসাইট কিভাবে নিয়ে আসবেন সেসব ভাবুন।

আমি যেভাবে সফল হয়েছি সবকিছু এই ওয়েবসাইটে শেয়ার করেছি। এগুলো পড়ুন, শিখুন, জানুন কিভাবে কাজ করতে হয়। আমার ব্লগিং এর ১বছরের জার্নিতে ১০০জনের বেশি মানুষকে এই পথে এসে হাড়িয়ে যেতে দেখেছি, শুধুমাত্র সঠিক উপায়ে কাজ করতে না পারার জন্য। পোস্টের শুরুতে বলেছি, আবারও বলছি আপনাকে অনেক বেশি জানতে হবে, শিখতে হবে। যারা এখনো স্ট্রাগল করছেন, আমার লেখা দ্বিতীয়বার পড়ছেন তাদের জন্য বলছি, ধৈর্য ধরে শিখুন।

কখনো অন্যের আইডিয়া নকল করবেন না। নিজেকে অন্যের কম্পিটিটর বানাবেন না। মনে রাখবেন গুগল সার্চ রেজাল্টের ১ম পজিশন আপনার জন্য চিরস্থায়ী নয়। আপনি আপনার ট্রাফিকের প্রতি গুরুত্ব দিন। আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর আপনার কাছে পরবর্তী কি লেখা চাইছে সেটি নিয়ে ভাবুন। আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট সবসময় আপডেটেড রাখুন। আপনার অডিয়েন্সদের কাছে ওয়েবসাইট টি যেভাবে পারেন জনপ্রিয় করে তুলুন। তবেই আপনি ব্লগিং ক্যারিয়ারে সফল হতে পারবেন। ধন্যবাদ

4.9/5 - (20 votes)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button