প্রেগন্যান্সি

গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া কি নিরাপদ?

গর্ভাবস্থায়, বিশেষ করে প্রথমবার মা হওয়া মহিলারা কী খাবেন এবং কী খাবেন না তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েন। যেমন, গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া। এ বিষয়ে প্রত্যেকেরই বিভিন্ন পরামর্শ রয়েছে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় রেখে আমরা এই পোস্টে এই বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করব।

এখানে আমরা বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে বলার চেষ্টা করব গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া নিরাপদ কি না। এর সাথে, গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কেও তথ্য দেব।

চলুন প্রথমে জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া উচিত কি না।

গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া কি নিরাপদ?

অনেক চিকিৎসা গবেষণা অনুসারে, গর্ভাবস্থায় করলা না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই গবেষণা অনুসারে, গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি নিরাপদ নয়। করলার মধ্যে পাওয়া কিছু রাসায়নিক ঋতুস্রাবের রক্তপাত ঘটায় ফলে গর্ভপাত হতে পারে। তাই গর্ভবতী মহিলার করলা খাওয়া উচিত নয়।

এখন, আমরা গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে তথ্য দেব।

গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়ার অপকারিতা

গর্ভাবস্থায় করলা না খাওয়ার পরামর্শের পিছনে এর সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকিগুলো দায়ী। আমরা নীচে ঝুঁকিগলো সম্পর্কে বিস্তারিত বলছি-

১. হজম সংক্রান্ত সমস্যা
স্বাভাবিক অবস্থায় করলার সেবন কোষ্ঠকাঠিন্য এর মতো পেট সংক্রান্ত অনেক সমস্যার চিকিৎসায় সহায়ক হয়। তবে, কিছু পরিস্থিতিতে, করলা পেটে ব্যথা এবং ডায়রিয়া সহ হজমের বিভিন্ন ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

২. গর্ভবতীর জন্য বিষাক্ত
গর্ভবতীর জন্য করলা খাওয়া বিষাক্ততা সৃষ্টি করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, এই বিষয়ে করা চিকিৎসা গবেষণায় দেখা যায় যে, করলার পাতার তুলনায় এর ফল ও বীজে বেশি বিষাক্ততা পাওয়া যায়। একই সময়ে, NCBI-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অন্য একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে, করলা খাওয়ার ফলে শরীরে তীব্র বিষাক্ততা, দীর্ঘস্থায়ী বিষাক্ততা এবং প্রজনন বিষাক্ততার মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই বলা যেতে পারে, গর্ভাবস্থায় করলা থেকে দূরে থাকাই ভালো।

৩. রক্তে শর্করার সমস্যা
করলাকে ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় উপকারী হিসেবে বিবেচনা করা হলেও গর্ভাবস্থায় এর সেবন ক্ষতিকর হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, এর হাইপোগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা রক্তের শর্করাকে কমাতে কাজ করে। এটি সাধারণ গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে লো ব্লাড সুগারের সমস্যা তৈরি করতে পারে, যা অনাগত শিশুর জন্য ক্ষতিকারক।

৪. গর্ভপাতের ঝুঁকি
গর্ভবতী মহিলাদের করলা থেকে দূরে রাখার সবচেয়ে বড় কারণ হল গর্ভপাতের ঝুঁকিগর্ভপাত করার ওষুধ হিসেবে প্রাচীনকালে করলা ব্যবহার করা হত। প্রকৃতপক্ষে, এতে মোমোরচারিন নামক একটি রাসায়নিক রয়েছে, যা গর্ভাবস্থার প্রথম ও মাঝামাঝি সময়ে গর্ভপাত ঘটাতে পারে।

চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক করলা সম্পর্কিত কিছু পাঠকের প্রশ্ন।

সচরাচর জিজ্ঞাস্য

গর্ভাবস্থায় করলার রস পান করা কি নিরাপদ

না, গর্ভাবস্থায় করলার রস খাওয়া জরায়ু সংকোচন ঘটাতে পারে, যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ক্ষতিকারক। এছাড়াও, এটি গর্ভবতী মহিলাদের রক্তপাত এবং গর্ভপাতের জন্য দায়ী।

গর্ভাবস্থায় করলার বীজ খাওয়া কি নিরাপদ ?

না, করলার বীজের টেরাটোজেনিক প্রভাব রয়েছে, যা ভ্রূণের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এ কারণে শিশুর জন্মগত ত্রুটির সমস্যা হতে পারে।

সুতরাং এটি স্পষ্ট যে, গর্ভাবস্থায় করলা এবং করলা জাতীয় খাবার থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিত।

এখনও যদি কোনও মহিলা গর্ভাবস্থায় করলা খেতে চান, তবে আমরা আপনাকে অবশ্যই একবার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে বলব।

আপনি গর্ভাবস্থার সাথে সম্পর্কিত আরও এই জাতীয় খাদ্য সম্পর্কিত তথ্যের জন্য আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য লেখাগুলোও পড়তে পারেন।

আরো পড়ুনঃ

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় আম খাওয়া উচিত কি না

2.8/5 - (5 votes)

Momtahina Momo

I’m Momtahina Momo, a writer at Shopnik who loves diving into the world of health, beauty, and technology. I enjoy creating content that helps readers live healthier, feel more confident, and stay connected with modern trends. Whether it’s a beauty hack, a wellness routine, or a tech tip, I’m here to share ideas that make everyday life better.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button