ইতিহাস

আমেরিকা আবিষ্কারের ইতিহাস

কলম্বাস কবে আমেরিকা আবিষ্কার করেন?

সময়টা পনের শতাব্দীর শুরুর দিকে, ১৪৩৬ সাল (মতভেদ আছে)। ইতালির জেনোয়া শহরে এক তাঁতির ঘরে জন্ম নিয়েছে এক ছেলে। বাবা নাম রাখলেন “ক্রিস্তোফোরো কোলোম্বো”(ইতালিয়), ইংরেজিতে “Christopher Colombus”, বাংলায় “ক্রিস্টোফার কলম্বাস”। বাবা তাঁতি হবার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই ছেলের ভারতবর্ষের সূক্ষ্ম বস্ত্রের সুনামের সাথে ছেলের পরিচয় হয়, বাবার কাছ থেকেই জানেন দূর সুমাত্রা ও জাভা দ্বীপের বিভিন্ন মশলার কথা। ছোটবেলা থেকেই ম্যাপ পেলেই বসে যেতেন ম্যাপ নিয়ে আর স্বপ্ন দেখতেন সমুদ্রের সুনীল জলরাশিতে ভেসে একদিন এসব দেশে যাবেন।

আমেরিকা আবিষ্কারের ইতিহাস -কিভাবে যাত্রা শুরু?

কৈশোর থেকে যৌবনে পদার্পন করলেন। যোগ দিলেন নৌ-যুদ্ধ বিভাগে। এর আগে ইতিহাস, ভূগোল, জ্যামিতি, জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ে অর্জন করলেন অগাধ জ্ঞান। চাকরিরত অবস্থায় যখনই সময় পেতেন মানচিত্র তৈরি করে বিক্রি করতেন। ছোটবেলা থেকেই মানচিত্র সম্পর্কে ছিলো তার অনেক আগ্রহ। মানচিত্রের আঁকাবাঁকা রেখা গুলোতে উপলব্ধি করতেন দূর দেশের ডাক। কবে যাবেন, কিভাবে যাবেন সেই চিন্তায় কেটেছে বহু নির্ঘুম রাত। দূর দেশে যাওয়াটা ছিলো তার শখ। কিন্তু জীবনে কি করবেন তখনো জানেন না তিনি কিংবা বলা যায় জোর দিয়ে কখনো ভাবেননি।

আনুমানিক ১৪৭৭ সালের দিকে চলে যান পর্তুগালের লিবসনে। লিবসনে এসে জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেন। বিয়ে করেন এক নৌ-কর্মচারীর মেয়েকে। এই বিয়েই পাল্টে দিয়েছিল তার জীবনের গতিপথ, ঠিক করে ফেললেন কি করবেন তিনি। আবিষ্কার করবেন, কিন্তু কি আবিষ্কার করবেন? ভারতবর্ষে যাবার পথ আবিষ্কার করবেন।

জীবনের এমন লক্ষ্য ঠিক করার পিছনে বিয়ে কিভাবে কাজ করেছে তার পিছনের কারণ হচ্ছে তার শ্বশুর মহাশয়। কলম্বাসের শ্বশুর ছিলেন একজন অভিজ্ঞ নাবিক তার সংগ্রহে ছিলো অনেক সূক্ষ্ম মানচিত্র, ছিলো সমুদ্র অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। তাছাড়া তার কাছে ভারতবর্ষ ও তার পাশের বিভিন্ন দ্বীপ নিয়ে তার নিজের কিছু লেখা ছিলো। যা থেকে আগ্রহ জন্মায় কলম্বাসের।

ভারতবর্ষের সঙ্গে তখন সরাসরি বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল আরবের ব্যাবসায়ীদের। তাদের থেকে ইউরোপের লোকের ভারতবর্ষের পণ্য পেতেন। এভাবেই ভারতবর্ষের পণ্যের প্রতি আগ্রহ জাগে ইউরোপের। তারা চাইছিলো ভারতবর্ষের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে তুলতে। কিন্তু সমুদ্রপথে ভারতবর্ষে যাবার রাস্তা তার জানতেন না। তারা চাইছিলেন আফ্রিকার দক্ষিণ-পুর্ব উপকূল দিয়ে ভারতবর্ষে পৌছানো যায় কিনা। (পরবর্তীতে ভাস্কো-দা-গামা দক্ষিণ আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপ হয়ে ভারতের পশ্চিম উপকূলের কালিকট বন্দরে আসেন ১৮৯৮ সালে।)

কলম্বাস ভাবতেন গ্লোবের উল্টোপিঠে পূর্ব-এশিয়া এবং সেখানে ভারতবর্ষ। তার ধারণা ছিলো আফ্রিকার উপকূল ঘুরে যাবার চাইতেও সংক্ষিপ্ত পথ আছে ভারতবর্ষে যাবার। তার লক্ষ্য ছিলো ঐ সংক্ষিপ্ত পথ খুজে বের করা। কিন্তু তার জন্য জাহাজ লাগবে, লোকবল লাগবে, খাদ্য-রসদ লাগবে যার কিছুই ছিলোনা কলম্বাসের কাছে।

কলম্বাস তার পরিকল্পনা নিয়ে বিভিন্ন রাজাদের দুয়ারে যেতে লাগলেন। শুনাতে লাগলেন তার পরিকল্পনা। সাহায্য চাইলেন রাজাদের। কিন্তু একে একে জেনোয়া, পর্তুগাল এবং ইংল্যান্ড থেকে বিতারিত খালি হাতে ফিরতে হলো। গেলেন স্পেনে। তখন স্পেনের রাজা ছিলেন ফার্দিনান্দ এবং রানী ছিলেন ইসাবেলা। তাদের কাছে সাহায্য চাইলেন। কলম্বাসের শর্ত ছিলো যদি সে কোন নতুন দেশে যায় তবে তাকে সেই দেশের রাজপ্রতিনিধি করতে হবে এবং রাজস্বের ভাগ দিতে হবে। রাজা-রানীর আগ্রহ ছিলো কলম্বাসকে সাহায্য করার কিন্তু কলম্বাসের সাথে শর্তে মিলছিলোনা বলে পুরোপুরি নাও করেননি তারা। আশায় আশায় কলম্বাস স্পেনে উমেদারি করে আট বছর কাটিয়ে দিলেন। এর মাঝে তার জীবনে এসেছে এক ঝড়। যে ঝড় তার স্ত্রীকে কেরে নিয়েছে, ঘাড়ে চেপে বসেছে দারিদ্র্য। পাওনাদারেরা কেরে নিয়েছে তার ম্যাপ এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি।

আশাহত কলম্বাস সব গুছিয়ে বিদেশ যাত্রার ব্যবস্থা করছেন, যাবেন প্যারিসে। যদি সেখানে কোন গতি হয়। কিন্তু এর মাঝে দেখা হলো এক পাদ্রীর সঙ্গে। পাদ্রী ভাবলেন যদি কখনো কলম্বাসের পরিকল্পনা সফল হয় তবে সেই গৌরবের অংশ হবে স্পেন। নতুন কোন দেশ আবিষ্কৃত হলে সেখানকার মানুষকে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করা যাবে। পাদ্রী গিয়ে রানীকে বুঝালেন। এবার রানী রাজি হলেন। ডাকলেন কলম্বাসকে, ব্যবস্থা করলেন কলম্বাসের যাত্রার। তখন স্পেনের রাজকোষের অবস্থা খারাপ। রাজা ফার্দিনান্দ রাজি নন। কিন্তু ইসাবেলা বললেন প্রয়োজনে তিনি তার নিজের অলংকার বিক্রি করে অভিযানের অর্থ যোগাড় করবেন।

১৪৯২ সালের আগস্ট মাসের ৩ তারিখ। পালোশ বন্দর থেকে কলম্বাস পিন্টা, নিনা, সান্টা মেরিয়া নামের তিনটি জাহাজ ও ১২০ জন লোক নিয়ে তার অভিযান শুরু করলেন। বন্দরে উপস্থিত সবার চোখে পানি। সবার ভাবনায় ছিলো এই অভিযান থেকে আর ফিরবেন না কেউ।

জাহাজ যাত্রা শুরু করলো পূর্ব দিকে। গন্তব্য জানা নেই। চারপাশে অথৈ পানি। যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। এভাবে কেটে গেলো ২১ দিন। এই ২১ দিনে অনিশ্চয়তার সাথে সাথে মোকাবিলা করতে হয়েছে ঝড়-বৃষ্টি-ঢেউ। জাহাজের অধিকাংশ মল্লারাই অশিক্ষিত। পৃথিবী সম্পর্কে জ্ঞান নেই বললেই চলে। তার উপর তারা জানেননা তারা কোথায় যাচ্ছেন কিংবা আদৌ কোথাও যেতে পারবেন কি না। অস্থিরতা ক্রমেই গ্রাস করলো তাদের। শুরু করলেন বিদ্রোহ- ফিরে যেতেই হবে।

একে যাত্রা পথের অনিশ্চয়তা, তার উপর মল্লাদের বিদ্রোহ। কলম্বাসের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো। কলম্বাস স্বান্তনা, ভয়, বল প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের সামলাতে লাগলেন। এদিকে আবার খাদ্য-রসদ যা এনেছিলেন তাও প্রায় শেষ হবার পথে। তবুও যাত্রা থামালেন না। চলতে লাগলো জাহাজ অনিশ্চয়তার পথে।

এরই মাঝে পানিতে দেখা গেলো একটা গাছের ডাল ভাসতে, আকাশে দেখা গেলো পাখি উড়তে। সবার চোখ উজ্জ্বল হয়ে গেলো। নিশ্চয়ই কাছেই কোথাও স্থল আছে। কলম্বাস হুকুম দিলেন পাখিকে অনুসরণ করে জাহাজ চালাতে। কিন্তু কিছু পরেই অদৃশ্য হয়ে গেলো পাখিটা। সেদিনই মাঝরাতে দূরে একটা আলোর মত কি যেন দেখা গেলো। পরের দিন আবার সব অদৃশ্য। হতাশা আরো ঘিড়ে ধরলো সবাইকে। সবাই ভাবতে লাগলো মানুষ বুঝি মৃত্যুর আগে এসব আবোলতাবোল দেখে। সবাই মৃত্যুর প্রহর গুনতে লাগলেন। এর মাঝেই আবার শুরু হলো ফিরে যাবার গুঞ্জন।

কলম্বাস ঘোষণা করলেন পুরষ্কার, যে আগে স্থল দেখতে পাবে তার জন্য। এর মাঝেই কেটে গেছে ৩৯ দিন। ৪০ তম দিনে অর্থাৎ ১২ই সেপ্টেম্বর রাতে পিন্টা জাহাজ থেকে কামান গর্জে উঠলো। কলম্বাস ভাবলেন আবার বুঝি বিদ্রোহ শুরু হলো। কিন্তু না, সাথে সাথে নাবিকদের প্রচন্ড হৈ চৈ শুনা গেলো। সেখানে কোন বেদনা ছিলোনা কিংবা ছিলোনা কোন অনিশ্চয়তা। যেটা ছিলো সেটা হলো বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দ। আর হবেই না কেন? – স্থল যে দেখা গেছে। কলম্বাস দাড়ালেন যীশুর সামনে। প্রার্থনা করলেন, ধন্যবাদ জানালেন ঈশ্বরকে। তাকে ভারতবর্ষের সন্ধান পাইয়ে দেবার জন্য। কলম্বাস ভাবলেন এটা ভারতবর্ষের পশ্চিম দিক তাই ঐ এলাকার নাম দিলেন ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ বা ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

পরদিন সকালে কলম্বাস সবাইকে নিয়ে দ্বীপে নামলেন এবং স্পেনের রাজা ফার্দিনান্দের নামে পতাকা উড়িয়ে দিলেন। কলম্বাস সেই দ্বীপের একটা নাম দিলেন “সান সালভাডর”। তার পরেই কলম্বাস খোঁজ করলেন সোনার। স্থানীয় আদিবাসীদের কিছু জিনিসপত্র উপহার দিয়ে নিয়ে নিলেন অনেক সোনা। সেখানকার আদিবাসীরা তাকে দেখালো সোনার খনির সন্ধান। কলম্বাস ছুটলেন সোনার খনির সন্ধানে। যাত্রা পথে কিউবা এবং হাইতির মত দ্বীপ আবিষ্কার করলেন। এর মাঝেই ঘটলা আরেক দুর্ঘটনা-ভেঙ্গে গেলো একটা জাহাজ। রসদও প্রায় শেষের দিকে, এবার ফিরে যাবার পালা। কিন্তু ৩৯ জন নাবিক সেখানেই থেকে যেতে চাইলেন।

কলম্বাস ইউরোপে ফেরার যাত্রা শুরু করলেন। কিন্তু সেই যাত্রা যেনো আর শেষ হতেই চাইছেনা। শুরু হলো ভয়ংকর ঝড়-তুফান, জাহাজের সবাই বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছেন। কলম্বাস আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন এই বিজয় বার্তা স্পেনে পৌছে দেবার। জীবনের আশা ছেড়ে দিয়ে কলম্বাস তার অভিযানের ঘটনা একটা পার্চমেন্ট কাগজে লিখে ফেললেন। কে জানে হয়তো এই কাগজ তার মৃত্যুর পর সভ্য জগতে পৌছাতেও পারে।

গুনে গুনে সাড়ে ৬ মাস। হ্যাঁ, সাড়ে ৬ মাস পর কলম্বাস ফিরে এলেন স্পেনে। ভাঙ্গা জাহাজ, ছেড়া জামাকাপড় পরা কলম্বাস এসে নামলেন স্পেনের বন্দরে। কিন্তু মুখে তার বিজয়ের হাসি। যে অভিযানের স্বপ্ন দেখেছেন সেই ছোটবেলা থেকে সেই অভিযান তার সফল হয়েছে। যেই পরিকল্পনা নিয়ে তিনি ঘুরেছিলেন রাজাদের দ্বারে দ্বারে সেই পরিকল্পনা আজ সাফল্যের মুখ দেখেছে। সেদিন পুরো নগর তাকে বরণ করে নিয়েছিল। বুক ফুলিয়ে সবার আগে আগে এগিয়ে এলেন কলম্বাস। সেদিন তার স্থান হয়েছিল রাজার সিংহাসনের পাশে। সবাইকে শুনালেন তার রোমাঞ্চকর অভিযানের গল্প। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনলো সবাই।

একই বছর কল্মবাস আবার অভিযানে বের হলেন। এবার আর কোন ছোটখাট অভিযান নয়। গুনে গুনে দেড় হাজার লোক নিয়ে যাত্রা করলেন আগের যাত্রা পথে। এসে পৌছালেন আগের জায়গায়। কিন্তু হায়! আগের ৩৯ জনের কেউ যে আর সেখানে নেই। জাহাজের ভাঙ্গা কাঠ দিয়ে যে বাড়ি তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলেন সেই বাড়িও নেই। লোকজনেও কোন খোঁজ পেলেন না। তাদের আশা ছেড়ে দিয়ে কলম্বাস স্থাপন করলেন ইউরোপের বাইরে প্রথম ইউরোপিও উপনিবেশ। যার দায়িত্ব দিলেন তার নিজের ভাইকে।

এবারের যাত্রায় আবিষ্কার হলো জ্যামাইকা। জ্যামাইকা আবিষ্কার করে এসে দেখলেন ভাইকে যেখানে রেখে গেছেন সেখানে তার ভাই নেই। স্থানীয় অধিবাসীরে তাদের দুর্ব্যবহারে ক্রুব্ধ হয়ে কুঠি ভেঙ্গে তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে। তার ভাই কোন রকম জীবন বাচিয়ে পালিয়েছে।

এই অভিযান থেকে ফিরে এসে এক সমস্যা বাধালেন কলম্বাস। অভিযান থেকে যে সকল সোনা এনেছিলেন কলম্বাস তার সবটাই দিয়ে দিলেন রানীকে। এতে করে তার সাথের নাবিকেরা রেগে গেলেন। তারা আশা করেছিলেন সোনাদানা পেয়ে রাতারাতি ধনী বনে যাবেন কিন্তু কিছুই পেলেন না। তারা শুরু করলেন কলম্বাসের নিন্দা। এখান থেকেই শুরু হলো কলম্বাসের পতন। সম্মানের যে উচ্চ শিখরে তিনি পৈছেছিলেন সেখান থেকে নেমে যাতে খুব বেশি সময় লাগেনি। বাড়তে থাকে তার শত্রু সংখ্যা। তার শত্রু বৃদ্ধি পাবার পিছনে অন্য যে কারণ ছিলো সেটা হলো সে ইতালিয়। একটার ইতালির লোক স্পেনে এত সম্মান এত সম্পদ পাবে সেটা সেখানের লোকেরা মেনে নিতে পারেনি। তার উপর পাদ্রীরাও রুষ্ঠ ছিলো কারণ সে নতুন আবিষ্কৃত দেশে খ্রীস্টধর্ম প্রচারের কোন ব্যবস্থা করেনি। কিন্তু কলম্বাস পাদ্রীদের বললেন যে, আগে সেখানে শৃঙ্খলা আনতে হবে তারপর ধর্ম প্রচার করতে হবে।

তৃতীয়বার যাত্রার প্রস্তুতি নিলেন কলম্বাস। সময় তখন ১৪৯৮ সালের ৩০শে মে। রাজার কাছ থেকে জেলখানার কয়েদিদের সাথে নিয়ে শুরু করলেন যাত্রা। পৌছালেন আগে যেখানে উপনিবেশ স্থাপন করেছিলেন সেখানে। সেখানে তাদের নামিয়ে দিয়ে কলম্বাস গেলেন অন্য পথে। এবার খোঁজ পেলেন এক বিশাল ভূখন্ডের-যেটা হতে পারে একটা মহাদেশ। কলম্বাস ভাবলেন এটা কোন দ্বীপ নয়, এটা হয়ত এশিয়ার কোন একটা অংশ। কলম্বাস সেদিন সেই মহাদেশকে চিনেননি সেটা একটা মহাদেশ। চিনলে তার জীবদ্দশায় জানতে পারতেন তিনি আমেরিকা মহাদেশ আবিষ্কার করেছেন। তিনি আবিষ্কার করেছেন সেই মহাদেশ যে মহাদেশ আজ পুরো পৃথিবীতে রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে।

কলম্বাস কবরে যাবার আগেও জানতেন তিনি ভারতবর্ষে যাবার রাস্তা আবিষ্কার করেছেন। ইউরোপ থেকে পূর্ব দিক দিয়ে ভারতবর্ষে যাবার পথ। তার মৃত্যুর কিছুদিন পরে আমেরিগো ভেসপুচি নামে এক বিশেষজ্ঞ গিয়ে নিশ্চিত হলেন বিশাল ভূখন্ডটি এশিয়ার কোন অংশ নয়, এটা একটা মহাদেশ। পরবর্তীতে তার নামেই সেই মহাদেশের নামকরণ করা হলো আমেরিকা।

কিন্তু এই কলম্বাসের একটা প্রামাণ্য ছবি আজও পাওয়া যায়নি। তাকে মৃত্যুর আগে দাড়াতে হয়েছিলো কাঠগড়ায়। বিশ্বাসঘাতকতার মিথ্যা অভিযোগ নিজের মাথায় নিতে হতে হয়েছিলো। যে রানীকে তিনি সমস্ত সোনা দিয়েছিলেন সেই রানীই তাকে ভুল বুঝেছিলেন। আদালতে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন “আমি তো বিশ্বাস ভাঙ্গিনি, আমি তো বিশ্বাস ভাঙ্গিনি”। শেষ পর্যন্ত সসম্মানে মুক্তি পেয়েছিলেন কলম্বাস। ফাঁসি তার হয়নি। কিন্তু ইতিহাসের বিচারে কলম্বাসকে ভিলেন হতেই হয়েছে। কারণ তার হাত ধরেই উপনিবেশবাদের বীজ বপন হয়েছিলো। তার হাত ধরেই আমেরিকাতে গোড়াপত্তন হয়েছিল ক্রীতদাস প্রথার।

গ্রিক পুরাণের ফিনিক্স পাখি যার মৃত্য থেকে জন্ম! এই অসাধারন গল্পটিও আমাদের ওয়েবসাইট থেকে পড়ে নিবেন।

তথ্যসূত্র ও ছবিঃ ইন্টারনেট এবং বরনীয় মানুষঃ স্মরণীয় বিচার (সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়)।।

Rate this post

Admin at Shopnik.com.bd

As the driving force behind Shopnik.com.bd, the Admin is dedicated to providing readers with insightful and informative blogs across a wide range of topics. From expert reviews on the latest products to engaging articles from anonymous contributors, the Admin ensures that every post is designed to inform, inspire, and engage. Whether it's tech, lifestyle, or the latest trends, Shopnik.com.bd is your go-to source for up-to-date information and valuable content.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button