মুলতানি মাটি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় ও নিয়ম

যুগ যুগ ধরে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য মুলতানি মাটি ব্যবহার হয়ে আসছে। সঠিক মুলতানি মাটি বুঝে কিনে ব্যবহার করতে পারলে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। আজকাল সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অর্গানিক উপাদানের জুড়ি নেই। এর উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি। এটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে ও খ্যাত।
Contents
মুলতানি মাটির উপকারিতা

১. ত্বক ফর্সা করে।
২. ত্বক উজ্জল করে।
৩. ছোপ ছোপ কালো দাগ দূর করে।
৪. মুখের বড় বড় গর্ত গুলো দূর করে দেয়।
৫. ত্বক মসৃণ করে তোলে।
৬. ত্বককে ভিতর থেকে পরিষ্কার করে।একে প্রাকৃতিক ক্লিনজার বলা হয়।
৭. বর্ন হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
৮. অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করে।
৯. ত্বকে কোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন দূর করে।
১০. ট্যানিং দূর করতে সাহায্য করে।
ত্বক ফর্সা করতে মুলতানি মাটির ফেইসপ্যাক
সব ধরনের ত্বকের জন্যই মুলতানি মাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তৈলাক্ত ত্বকে ময়েশ্চারাইজার বা মেকাপ ব্যবহার করলেই কিছুক্ষণ পর তেল ভেসে উঠে। এই অতিরিক্ত তেল দূর করে লোপকূপ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে মুলতানি মাটি। এছাড়াও শুষ্ক ত্বক বা কম্বিনেশন ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে ও মুলতানি মাটির যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
ত্বক ফর্সা করতে মুলতানি মাটির ব্যবহার
১. এটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অনেক উপকারী একটি ফেইসপ্যাক :
উপকরণ :
- একটি পরিষ্কার পাত্র
- মুলতানি মাটি
- লেবুর রস
- গোলাপ জল
- সাধারণ পানি
বানানোর প্রক্রিয়া এবং ব্যবহার:
- একটি পরিষ্কার পাত্রে ৪ চা চামচ মুলতানি মাটি নিন।
- ১-২ ফোঁটা লেবুর রস যোগ করে নিন।
- পরিমান মতো গোলাপজল মিক্স করে নিন।
- মিশ্রণটি ভালোভাবে নেড়ে নিন।
- ফেইসওয়াস দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
- সিলিকনের ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার ত্বকে ব্যবহার করুন।
- ১০-১২মিনিট অপেক্ষা করুন।
- কিছুটা টান টান অনুভব হলে পরিস্কার পানি দিয়ে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে ১-২ দিন এটি ব্যবহার করুন।
২. উপকরণ :
- মুলতানি মাটি
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল
- টকদই
- সাধারণ পানি
বানানোর প্রক্রিয়া এবং ব্যবহার:
- একটি পরিষ্কার পাত্রে আপনার প্রয়োজনমতো ২-৪ চামচ মুলতানি মাটি নিন।
- একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে নিন।
- এর সাথে ২ চামচ টকদই মিশিয়ে নিন।
- এর সাথে পানি মিক্স করে একটু পাতলা করুন।
- সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।
৩. এই মুলতানি মাটির ফেইসপ্যাকটি শুষ্ক ত্বকের জন্য অনেক উপকারী।
উপকরণ:
- একটি পরিষ্কার পাত্র
- মুলতানি মাটি
- অ্যালোভেরা জেল
- নিমের গুড়া
- গোলাপ জল
note: অ্যালোভেরা জেল এর পরিবর্তে মধু ব্যবহার করা যাবে।
শুষ্ক ত্বকের জন্য সাথে বেসন ব্যবহার করতে পারেন।
বানানোর প্রক্রিয়া এবং ব্যবহার:
- একটি পরিষ্কার পাত্রে ৪ চা চামচ মুলতানি মাটি নিয়ে নিন।
- নিমের গুড়ো যোগ করুন ১ চা চামচ।
- অ্যালোভেরা জেল ২ চা চামচ মিশিয়ে নিন।
- ১ চা চামচ এর পরিমাণ গোলাপ জল মিক্স করুন।
- প্রয়োজনমতো পানি মিশিয়ে নিন।
- মিক্সনটি ভালো ভাবে নেড়ে নিন। এরপর এপ্লাই করুন।
- ১০ মিনিট রেখে হাতে অল্প কিছুটা পানি নিয়ে ম্যাসাজ করুন।
- ধুয়ে ফেলুন।
এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে অনেক সাহায্য করে।
৪. এই মুলতানি মাটির ফেইসপ্যাকটি ট্যানিং দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
উপকরণ:
- মুলতানি মাটি
- টক দই ১ চা চামচ
- অ্যালোভেরা জেল
বানানোর প্রক্রিয়া এবং ব্যবহার
- প্রথমেই একটি পরিষ্কার পাত্রে ২-৩ চা চামচ মুলতানি মাটি নিয়ে নিন।
- তাতে ১ চা চামচ টক দই যোগ করুন।
- ২ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশান।
- মিশ্রণটি ভালোভাবে নাড়ুন।
- পরিষ্কার ত্বকে ব্যবহার করুন।
- ৮-১০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে ১-২ দিন ব্যবহার করুন।
যারা নিয়মিত বাহিরে যান তাদের জন্য এই ফেইসপ্যাক একটি আশীর্বাদ। এটি অনেকদিন পুরনো ট্যানিং ও দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে।
মুলতানি মাটি ব্যবহার এর অপকারিতা এবং সর্তকতা
১. ওয়েলি স্কিন বা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মুলতানি মাটি অনেক বেশি উপকারী। কারণ এটি অতিরিক্ত তেল দূর করে থাকে।কিন্তু শুষ্ক ত্বকের জন্য মুলতানি মাটির সাথে অবশ্যই স্কিন মশ্চরাইজ করে এমন কোন উপকরণ ব্যবহার করতে হবে।যেমন : মধু, অ্যালোভেরা জেল ইত্যাদি।
২. মুলতানি মাটি ব্যবহার করে সূর্যের আলোতে যাওয়া পরিহার করবেন।ঘরে সাধারণ তাপমাত্রায় দিনে বা রাতে ব্যবহার করতে পারেন।এতে কোনো অসুবিধাই হবেনা।
৩. এই ফেইসপ্যাক ব্যবহার করে বেশি কথা না বলাই উত্তম,এতে চামড়ায় টান পড়তে পারে যার থেকে বলিরেখার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৪. ত্বকে লেবুর ডিরেক্ট ব্যবহার কম করাই ভালো। কোনো ভাবেই ১-২ ফোটার বেশি ব্যবহার করবেন না।
আরো পড়ুনঃ