সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ সহ, অর্থ ও ফজিলত
সূরা আসর মক্কায় নাজিল হয়েছে। সূরা আসর কোরআন মাজিদের ১০৩ নম্বর সূরা। সূরা আসর পবিত্র কুরআনের অতি সংক্ষিপ্ত এক সূরা। এই সূরায় আয়াত সংখ্যা মোট ৩ টি।
সূরা আসর এর আরবী উচ্চারণ
وَٱلْعَصْرِ
إِنَّ ٱلْإِنسَٰنَ لَفِى خُسْرٍ
إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَتَوَاصَوْا۟ بِٱلْحَقِّ وَتَوَاصَوْا۟ بِٱلصَّبْرِ
সূরা আসর এর বাংলা উচ্চারণ
১) ওয়াল ‘আসর।
২) ইন্নাল ইনছা-না লাফী খুছর।
৩) ইল্লাল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি ওয়া তাওয়া-সাওবিল হাক্কি ওয়া তাওয়া-সাও বিসসাবরি।
সূরা আসর এর বাংলা অর্থ
১) কসম যুগের (সময়ের),
২) নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;
৩) কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের।
সূরা আসর এর ফজিলত
হযরত আব্দুল্লাহ বিন হাফ্ছ (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণের মধ্যে এমন দু’জন ছাহাবী ছিলেন, যারা মিলিত হলে একে অপরকে সূরা আছর না শুনিয়ে পৃথক হতেন না।
ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে ইদরীস আশ-শাফেঈ (১৫০-২০৪ হিঃ) বলেনঃ لَوْ تَدَبَّرَ النَّاسُ هَذِهِ السُّوْرَةَ لَوَسِعَتْهُمْ- ‘যদি মানুষ এই সূরাটি গবেষণা করত, তাহলে এটাই তাদের জন্য যথেষ্ট হত’ (ইবনু কাছীর)।
জীবনীকারগণ বর্ণনা করেছেনঃ হযরত আমর ইবনুল আছ (রাঃ) মুসলমান হওয়ার পূর্বে একবার ভন্ডনবী মুসায়লামা কাযযাবের কাছে গিয়েছিলেন। তখন মুসায়লামা তাকে বলেন, তোমাদের নবীর উপর সম্প্রতি কি নাযিল হয়েছে? তিনি বললেন, তাঁর উপরে অতি সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ (وجيزة بليغة) একটি সূরা নাযিল হয়েছে। মুসায়লামা কাযযাব বলল, সেটা কি? তখন আমর ইবনুল আছ তাকে সূরা আছর শুনিয়ে দিলেন।
অতঃপর ভন্ডনবী কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বলল, আমার উপরেও অনুরূপ একটা সূরা নাযিল হয়েছে। আমর ইবনুল আছ বললেন, সেটা কি? তখন মুসায়লামা বলল, يَا وَبْرُ يَا وَبْرُ، إِنَّمَا أَنْتَ أُذْنَانِ وَصَدْر، وَسَائِرُكَ حَقْر و فَقْرُ– ‘হে ওয়াব্র হে ওয়াব্র (বিড়াল জাতীয় ছোট প্রাণী)! তোমার আছে কেবল দু’টি বড় কান ও সীনা। আর তোমার বাকী সবই ফালতু’। অতঃপর মুসায়লামা জিজ্ঞেস করল, কেমন লাগল? জবাবে আমর ইবনুল আছ বললেন, وَاللهِ إِنَّكَ لَتَعْلَمُ أَنِّي أَعْلَمُ أَنَّكَ تَكْذِبُ ‘আল্লাহর কসম! তুমি ভালভাবেই জানো যে, আমি জানি তুমি মিথ্যা বলছ’ (ইবনু কাছীর)।
লক্ষণীয় বিষয় এই যে, উভয়ে কুফরী অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও কুরআনী সত্যকে আমর ইবনুল আছ দ্বিধাহীনচিত্তে স্বীকার করেন। এই সত্যপ্রিয়তাই তাঁকে পরে ইসলামের পথে উদ্বুদ্ধ করে এবং তিনি ও খালেদ ইবনু ওয়ালীদ এবং কাবা গৃহের চাবি রক্ষক ওছমান বিন তালহা ৭ম হিজরীর প্রথম দিকে মদীনায় গিয়ে ইসলাম কবুল করেন (আর-রাহীক্ব পৃঃ ৩৪৭)। বস্ত্ততঃ বড় হৌক বা ছোট হৌক কুরআনের প্রতিটি সূরা, আয়াত ও বর্ণই হতবুদ্ধিকর (مُعْجِزٌ)। যার মুকাবিলা করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
আরো পড়ুনঃ