চুল বাঁধার সহজ নিয়ম
চুল বাঁধার উপরেই চুলের সৌন্দর্য অনেকাংশে নির্ভর করে। মেয়েরা প্রায় সব সময়ই চায় নিজেদেরকে পরিপাটি রাখতে। আর নিজেকে পরিপাটি রাখতে হলে চুলের যত্ন নিতেই হবে। তারা পছন্দ করে চুলকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে বাঁধতে। বিশেষ করে যে কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় চুল যদি স্টাইলিশ করে না বাঁধা যায় তাহলে যেন মনে হয় নিজেকে পরিপাটি লাগছে না। চুল বাধার সহজ নিয়ম গুলো জেনে আপনি যখন সুন্দর করে চুল বাঁধবেন তখন আপনার চেহারার সৌন্দর্য আরো অনেক বেড়ে যাবে। তাই অনুষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী মেকআপ করা হয়ে থাকে এবং চুলের স্টাইলটা সেইভাবে করা হয়ে থাকে।
বর্তমানে মেয়েরা চুল সুন্দর ভাবে বাঁধার জন্য পার্লারে গিয়ে থাকেন। আর এর জন্য কমবেশি অর্থ ব্যয় হয়ে থাকে তাদের। আজকে আমি আপনাদেরকে বলে দিব চুল বাধার সহজ নিয়ম এবং এমন কিছু উপায় যার মাধ্যমে আপনারা নিজেরাই নিজেদের চুল বাঁধতে পারবেন। আর এর মাধ্যমে আপনাদের অর্থ খরচ হবে না বরং অর্থ সঞ্চয় হবে। আপনারা হয়তো প্রাচীন প্রবাদটি শুনেছেন -“যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে”।
চুল বাঁধা আসলে চুলের ধরন অনুযায়ী করা হয়ে থাকে। সব রকম চুলে সব ধরনের ডিজাইন করা যায় না। যেমন ধরুন -ছোট চুল, লম্বা চুল, কোঁকড়া চুল বিভিন্ন স্টাইলে কাটা চুল ইত্যাদি।আবার ধরুন আপনি কোন অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন তাহলে আপনার অনুষ্ঠানের সময় বা ধরন অনুযায়ী চুল বাঁধতে হয়। আজকে আমি আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করব চুল বাধার সহজ নয়টি নিয়ম সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নেয়া যাক-
Contents
চুল বাঁধার সহজ নিয়ম ৯ টি উপায়
১.শর্ট কার্ল হেয়ার
শর্ট কার্ল হেয়ার টা একদম ছোট এবং কাট চুলে খুবই সুন্দর মানায়। প্রথমে কারলিং আগাড় মেশিন দিয়ে চুলে আগাড় কিছু অংশ কার্ল করে নিতে হবে। আর এর মাধ্যমে চুলে একটা ওয়েভি ভাব চলে আসবে। তারপর আপনি যদি মনে করেন চুল এভাবেও রেখে দিতে পারেন বা ক্লিপ দিয়ে আটকে রাখতে পারেন।
২.বুফোঁ হেয়ার
বুফোঁ হেয়ার হচ্ছে মাথার মাঝখানে কিছু চুল নিয়ে কার্লিং ক্লিপ দেয়ার মাধ্যমে হালকা উঁচু করে রাখা। আর এক্ষেত্রে আপনি চাইলে চুল কার্ল করতে পারেন আবার না করলেও তেমন কোন সমস্যা নেই।
৩.সাইড ব্রেড স্টাইল
এক সাইডে ছোট বিনুনি বা যেকোনো এক সাইডে সিথী করে চুল আঁচড়ে নিন। তারপর বিপরীত দিক থেকে একটা বিনুনী করে সেটা ক্লিপ দিয়ে আটকে নিন। আপনি চাইলে এইভাবে অনেকগুলো বিনুনী করে সেগুলো ক্লিপ দিয়ে আটকে রাখতে পারেন। আর আপনি যদি বিনুনি গুলো আরো স্টাইলিশ করতে চান তাহলে কালারফুল বিডস লাগিয়ে নিতে পারেন।
৪. ফ্রন্ট ব্রেড স্টাইল
প্রথমে আপনার মাথার সব চুল ব্যাক কোম্ব করে নিতে হবে। তারপর সামনের দিক থেকে ছোট ছোট বিনুনি বেঁধে নিতে হবে। তারপর বিনুনি গুলো পেছনদিকে নিয়ে যেয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকে দিতে হবে। আর এই ক্ষেত্রে দুই সাইডে যদি কিছু চুল খোলা রাখা যায় তাহলে দেখতে আরো সুন্দর লাগে।
৫.বেড়া বিনুনির বান
মূলত এটি হলো একটি স্টাইলিশ হেয়ার বান। প্রথমে আপনাকে চুল দুই ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। তারপর চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী দুটো বিনুনি বেঁধে নিতে হবে।এবার ক্রসের মত করে বা দিকের বিনুনি ডান দিকে এবং ডানদিকে বাদিকে নিয়ে গিয়ে আটকে দিতে হবে।এভাবে আস্তে আস্তে বিনুনি পেচিয়ে পেচিয়ে বানের মতো করে ফেলতে হবে। তারপর শেষে ক্লিপ দিয়ে আটকে ফেলতে হবে।
৬.লেসব্রেড আপডু স্টাইল
এই বিনুনিটা দেখতেও অনেকটা বেড়া বিনুনি বানের মতন। প্রথমে আপনাকে মাঝখানে সিঁথি করে চুল দুই ভাগ করে নিয়ে ঢিলেঢালা করে দুটো বিনুনি বাঁধতে হবে। বিনুনি বাঁধতে হবে শুধুমাত্র চুলের সাইড করে এবং বাকি চুল সব ছাড়াই থাকবে। তারপর একটি বেনুনি উপরের দিকে তুলে ক্লিপ দিয়ে আটকে নিতে হবে। আর এটা সাধারণত এমনভাবে আটকাতে হবে চুলের যে অংশ ছাড়া ছিল সেটার জন্য নিচের দিকে থাকে। এবার অন্য বিনুনিটাও একই ভাবে রাখতে হবে।
৭.রোপ ব্রেড বান স্টাইল
পাকানো দড়ির মতো দেখতে লাগে বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে রোপ ব্রেড বান।প্রথমে আপনাকে চুল আঁচড়ে নিয়ে ব্যাক কোম্ব করে নিতে হবে। তারপর মাথার মাঝখান থেকে অল্প কিছু চুল নিয়ে বিনুনী করে পেঁচিয়ে বেঁধে নিতে হবে। তারপর আবার একইভাবে কিছু চুল নিয়ে বিনুনী করে পেচিয়ে বেঁধে নিতে হবে। আর এই ভাবে আপনাকে তিন-চারবার এই কাজটা করতে হবে। তারপর প্রথম বিনুনি গুটিয়ে ছোট করে ক্লিপ দিয়ে আটকে ফেলতে হবে। আর সাধারনত এই স্টাইলটা যেমন একটু মেসি টাইপ তাই ছোট চুল বের হলে ঠিক করতে হবে না।
৮.বানউইথ হেয়ার সাইড ব্রেড
এই নিয়মটি হল মূলত বেনুনি আর খোপার যুগলবন্দী গোছা।প্রথমে আপনাকে চুল মাঝখানে সিঁথি করে দুই ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। তারপর দুদিক থেকে দুটো বিনুনি বাঁধতে হবে হবে এবং যেখান থেকে সেটি শুরু হবে সেখান থেকে বেনুনি বাঁধতে হবে। তারপর মাথার ক্রাউন অঞ্চল একটু ফুলিয়ে একটা পনিটেল বাঁধতে হবে। আপনি যখন পনিটেইল বাঁধবেন তখন মাথার সমস্ত চুল নিয়ে নিতে হবে। তারপর পনিটিলের চারদিকে বিনুনি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বাঁধতে হবে যেন সেটা দেখতে খোঁপা বা বানের মত হয়ে থাকে। তারপর একটা বিনুনি বেঁধে সেটা ঘুরিয়ে নিয়ে খোঁপা করে নিতে হবে। আপনি যদি চান খোপায় বিনুনি আটকাতে পিন ব্যবহার করতে পারেন।
৯.স্লিক ভিক্সেন
যাদের চুল সাধারণত সোজা তাদের এই স্টাইলটি করলে দারুণ মানাবে। আর যদি চুল সোজা না হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে চুল স্ট্রেইনিং করে নিতে হবে। প্রথমে আপনাকে যেকোন সাইড থেকে চুল ঘুরিয়ে অন্যদিকে নিয়ে যেতে হবে। এমনভাবে এই কাজটি করতে হবে যেন নিচ দিয়ে বাকি চুল বেরিয়ে না থাকে। যে চুলগুলো ঘুরিয়েছেন সে চুল গুলো আলাদা আলাদা ভাগ করে নিয়ে পেন দিয়ে আটকাতে হবে। তারপর যে অংশটুকু বেরিয়ে থাকবে সে টুকু চুল দিয়ে ছোট একটা নোট বাঁধুন এবং বাকি চুলগুলো খোলা রাখুন।
১০.মেসি বান
মেসি বান হলো খুবই সুন্দর একটি হেয়ার স্টাইল। আপনি এটি বাড়িতে বসেই করতে পারবেন এবং যেকোন ক্যাজুয়াল পোশাকেই এটা মানানসই। প্রথমে আপনাকে ভালো করে চুল আংগুলের মাধ্যমে আঁচড়ে নিতে হবে। তারপর উঁচু করে একটা পনিটেইল বেঁধে নিতে হবে। তারপর বাকি চুল হাতের সাহায্যে পেচিয়ে বানের মত গোল করে ক্লিপের সাথে আটকে দিতে হবে। তারপর হয়ে গেলে মাথার সামনের দুই পাশের চুল লক্সের মত বের করে নিন।
আমাদের ওয়েবসাইটের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পোস্ট চুল ঘন করার উপায়, চুল পড়া বন্ধ করার উপায়, খুশকি দূর করার উপায় প্রাকৃতিকভাবে, চুল সিল্কি করার উপায় এগুলো পড়ে নিন। এবং জেনে নিন, তিসির উপকারিতা, তিসির তেল বানানোর নিয়ম, তিসি খাওয়ার নিয়ম এগুলো।
Conclusion
আমার আলোচনা করা চুল বাঁধার সহজ নিয়ম গুলো জানার পর আপনারা এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন হয়তো চুলের ধরণ এবং দৈর্ঘ্য অনুযায়ী চুল বাঁধতে হবে। আর চুল বাধার আগে অবশ্যই চুল ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। আর আপনার হাতে যদি সময় কম থাকে তাহলে আপনি হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করে চুল শুকাতে পারেন। অনুষ্ঠানের সময় ও ধরন অনুযায়ী চুল ভালো করে স্টাইলিশ করে বাঁধতে পারেন। আর অবশ্যই সব থেকে জরুরি যে বিষয়টা সেটি হলো- চুল বাধার সময় অবশ্যই ভালো হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করতে হবে।মূলত এখানে যে কয়টি চুল বাঁধার পদ্ধতি রয়েছে আপনারা যদি কোন পদ্ধতি বা নিয়ম বুঝতে না পারেন তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন।।